শীর্ষ খবর

সিলেটের সব নদীর পানি বিপদসীমার উপরে : নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত বিস্তীর্ণ এলাকা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা ও জেলা সদরের সাথে গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পাহাড়ী ঢলে জৈন্তাপুর উপজেলায় রাংপানি, বড়গাঙ ও সারি নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের চাল্লাইন, গর্দনা, মুটগুঞ্জা, ফেনগ্রাম, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের শেওলারটুক, বাওন হাওর, ঝিঙ্গাবাড়ি, আসামপাড়া, কেন্দ্রি, কাঠালবাড়ি, নলজুড়ি ইউনিয়নের লক্ষীপুর, ভিরাইমারা, কাটাখাল, কেন্দ্রি, মুক্তাপুর, নিজপাট ইউনিয়নের হর্ণি, বাইরাখেল, চারিকাটা ইউনিয়নের বালিগাড়া, আইঞ্জাগ্রাম, লালা, গৌরি, ডুবাং এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, এখনো সিলেটের সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে উজানে ভারতের পাহাড়ী এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় ঢলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত না হলে কয়েকদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় কানাইঘাট পয়েন্টে ছিল ১২.৩৬ সেন্টিমিটার। শনিবার সকাল ৯টায় পানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৬৬ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা থেকে মাত্র ০.৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।

সুরমা নদীর পানি বেড়েছে সিলেট পয়েন্টেও। শুক্রবার সন্ধ্যায় যেখানে পানি ছিল ৯.৭৮ সেন্টিমিটার, শনিবার সেখানে ৯.৯৫ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহিত হয়।

কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে শুক্রবারের চেয়ে বেড়েছে ০.৮ সেন্টিমিটার। শুক্রবার পানি ছিল ১৩.৩১ সেন্টিমিটার, শনিবার দাঁড়িয়েছে ১৩.৩৯ সেন্টিমিটার।

শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ১০.৯৭ সেন্টিমিটার। শনিবার সকাল ৯টায় পানি ১১.০৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কুশিয়ারার পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে স্থিতিশীল রয়েছে।

কানাইঘাট দিয়ে বয়ে যাওয়া লোভা নদীর পানি শুক্রবারের চেয়ে বেড়েছে ০.৭৪ সেন্টিমিটার। লোভাছড়া পয়েন্টে এ নদীর পানি শুক্রবার সন্ধ্যায় ছিল ১৩.৪৯ সেন্টিমিটার। শনিবার সকালে পানি ১৪.২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে শুক্রবার ছিল ১১.৭০ সেন্টিমিটার। শনিবার ০.২৬ সেন্টিমিটার বেড়ে হয়েছে ১১.৯৬ সেন্টিমিটার।

এদিকে ধলাই নদীর পানি ইসলামপুর পয়েন্টে শুক্রবার ১০.৩১ সেন্টিমিটার ছিল, শনিবার বেড়ে ১০.৯৮ সেন্টিমিটার হয়েছে।

শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি বিষয়ক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‌‘দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়াও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে শীঘ্রই বন্যা দেখা দিতে পারে।

আরও সংবাদ

Close