বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এই অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে যার যার ধর্মপালন করার চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছি, এই পরিবেশটাও যেন চিরদিন অব্যাহত থাকে, আর সকলের জীবনমান যেন উন্নত হয়। বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এক হয়ে আমরা পথ চলি।’

সোমবার ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা দেখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দুর্গোৎসবের নবমীতে প্রধানমন্ত্রী রামকৃষ্ণ মিশনে পৌঁছলে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান মঠ ও মিশন প্রধান স্বামী পূর্ণাত্মানন্দসহ মিশনের কর্মকর্তারা। স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ তার লেখা বই প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন। এসময় স্থানীয় সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ ও আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব সময় বলি ধর্ম যার যার, উৎসব সকলের। আমাদের উৎসবগুলো সবাই আমরা এক হয়ে উদযাপন করি। এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটা অর্জন যে আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে চলতে শিখেছি।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার লড়াই করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, যে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশে সকল ধর্মের মানুষ, অর্থাৎ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকল ধর্ম এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বুকের রক্ত বিলিয়ে দিয়ে এই বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে।’

‘কাজেই সেই স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা সব সময় চেয়েছি- প্রতিটি ধর্মের মানুষ তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে, সম্মানের সাথে পালন করতে পারবে সেই পরিবেশটা সৃষ্টি করা এবং আমরা তা করতে পেরেছি। অন্তত এইটুকু বলতে পারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন সেই সুন্দর পরিবেশটা সৃষ্টি হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকে প্রত্যেকের ধর্মকে আমরা সম্মান করি এবং আমরা চাই আমাদের দেশে শান্তি ফিরে আসুক। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি এই ধরনের যেসকল ব্যাধি সমাজকে নষ্ট করে, দেশকে নষ্ট করে, পরিবারকে নষ্ট করে, পরিবারের জীবনকে অতিষ্ট করে সেই ধরনের অবস্থা যেন না থাকে। বাংলাদেশে শান্তি বজায় থাকবে, সমৃদ্ধি ও উন্নতি হবে এবং অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে সেটাই আমরা চাই।’

সম্প্রতি তার ভারত সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘গত পরশুদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ আমরা যৌথভাবে রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্রাবাস এবং একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেছি, যেখানে হিন্দু, সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারবে।’

রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী সেখান থেকে পরে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যান।