শীর্ষ খবর
নিজেরাই তৈরি করতে পারি, আগামীতে রফতানি করবো
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২টি অফশোর প্যাট্রল ভেসেল (ওপিভি), ৫টি ইনশোর প্যাট্রল ভেসেল (আইপিভি), ২টি ফাস্ট প্যাট্রল বোট (এফপিভি), ও বিসিজি বেইজ ভোলা- এর কমিশনিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৫ নভেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের নিজস্ব ডকইয়ার্ড ও শিপইয়ার্ডে জাহাজ শিল্পের অগ্রগতির কথা তুলে তিনি বলেন, আমরা নিজেরাও পারি, আমরাই তৈরি করতে পারি, সেটি আমরা প্রমাণ করলাম। আজকে আমাদের কাজে লাগল, আগামীতে আমরা রফতানি করব ইনশাল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন। এরপর কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক একে একে জাহাজের ক্যাপ্টেনদের কাছে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন। এরপর যা সময়ে ঘাঁটিসমূহ ঘাঁটির নাম ফলক উন্মোচন করা হয় এবং কমিশনিং ঘণ্টা বাজানোর মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয়। কমিশনিং শেষে জাহাজগুলোর সফল ও নিরাপদ যাত্রার জন্য দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ পরিচালনা করতে গেলে অনেক সময় অনেকের অনেক উপদেশ-টুপদেশ বা অনেক কিছু শুনতে হয়। আমাদের খুলনা শিপইয়ার্ড; ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের নির্দেশ ছিল শিপইর্য়াড লাভজনক হচ্ছে না, ওটা বন্ধ করে দিতে হবে। কিন্তু আমি ১৯৯৬ সালে সরকারে আসি তখন বলি এটা বন্ধ করব কেন? কারণ আমাদের সমুদ্রসীমা অর্জন করতে হবে, এটা আর কেউ না জানুক আমি জানতাম এবং আমাদের পরিকল্পনা ছিল।’
তা ছাড়া নদীমাতৃক বাংলাদেশ আমাদের একটা শিপইয়ার্ড একান্তভাবে দরকার। একসময় বাংলাদেশে সেই আদি যুগেরও কিন্তু জাহাজশিল্প ছিল, তারা এখান থেকে জাহাজ রফতানি করত বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এই কথা চিন্তা করে আমি তখন বাংলাদেশ নেভিকে এই শিপইয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়ে ছিলাম। এটি সম্পূর্ণ তাদের হাতে। কাজেই আজকে আমরা সেখানে আমাদের জাহাজগুলো তৈরি করতে পারছি।’
নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড ও খুলনা শিপইয়ার্ডে জাহাজ শিল্প বা তৈরি করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘অর্থাৎ আমরা নিজেরাও পারি, আমরাই তৈরি করতে পারি, সেটা আমরা প্রমাণ করলাম। আজকে আমাদের কাজে লাগলো, আগামীতে আমরা রফতানি করব ইনশাল্লাহ।’
দেশীয় শিপইয়ার্ড শিপইয়ার্ডে তৈরি জাহাজগুলি অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবদান রাখবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের নদীপথে ও উপকূলীয় এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অবদান রাখবে বলেও অবহিত করেন তিনি।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আরেকটি ডকইয়ার্ড নির্মাণের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ২০০৯ সাল থেকে তার সরকারের আমলে কোস্ট গার্ডের জনবল বৃদ্ধি করা সহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘গভীর সমুদ্র নির্ভর অর্থনীতি কার্যক্রমকে গতিশীল রাখা এবং নিরাপদ রাখা, ব্লু ইকোনমির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পসমূহ ও ব্যক্তিগত জানমালের নিরাপত্তা বিধানের আজকের কমিশনকৃত জাহাজসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কোস্টগার্ডের বিভিন্ন জাহাজ এবং ঘাঁটি কমিশনের মাধ্যমে এই বাহিনীর সক্ষমতা আরও একধাপ এগিয়ে গেল। পেশাগত উৎকর্ষতা মানসিক বিকাশ ও উন্নত মনোবল অর্জনের যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলেও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
এ ছাড়া বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর প্রতিও ধন্যবাদ জানান তিনি। কারণ যাদের সহযোগিতায় কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে আজকের জাহাজগুলো কমিশনিং করা সম্ভব হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ শুরু হয়েছে। সে জন্য সকলকে সাবধানে থাকার পরামর্শ ও আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি সবাইকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি অপরকেও সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণেরও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।