শীর্ষ খবর
গল্প-আড্ডার ফাঁকে রোগী দেখেন ওসমানীর ডাক্তাররা : ক্ষোভ ঝাড়লেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মীনি
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বন্দি চরম অব্যবস্থাপনার বেড়াজালে। পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। দূর দুরান্ত থেকে আসা রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনায়, দালাদের দৌরাত্ম্যে এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলায় সাধারণ মানুষ পূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট নিয়ে যখন ডাক্তারের কাছে যান তখন ডাক্তাররা রোগী ফেলে ব্যস্ত থাকেন আড্ডায়। রোগীর দিকে তাকিয়েই লিখে দেন ওষুধ। এ যেন নামমাত্র চিকিৎসা। তাছাড়া রোগীকে বিভিন্ন টেস্ট করানোর পর তা দেখারও প্রয়োজন মনে করেন না। রিপোর্ট না দেখেই ওষুধ লিখেন। তাহলে শুধু শুধু টেস্ট করানোর কি দরকার! এমন কথাও শোনা যায় রোগীদের কাছ থেকে।
ওসমানী হাসপাতালের এই অব্যবস্থাপনা, দুর্ভোগের চিত্র ক্ষুব্ধ করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ ড. এ কে আব্দুল মোমেনের স্ত্রী সেলিনা মোমেনকে। গতকাল রবিবার বেলা ১টার দিকে ওসমানী হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি।
জানা গেছে, সেলিনা মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক পরিচয়েই হাসপাতালে যান।
জানা গেছে, রবিবার বেলা ১টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে (জরুরি বিভাগ) যান সেলিনা মোমেন। কিন্তু তাকে জানানো হয়, ইমার্জেন্সি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে অবাক হন সেলিনা মোমেন। তিনি তখন জানতে চান, ইমার্জেন্সি তো সবসময়ই খোলা থাকবে, এটা আবার বন্ধ হয় কি করে।
পরে সেলিনা মোমেন ১০ টাকার টিকেট কেটে সাধারণ মানুষের লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসক দেখাতে যান। কিন্তু চিকিৎসকের কক্ষে দায়িত্বরতদের তিনি আড্ডা ও খোশগল্পে মশগুল থাকতে দেখেন।
ওসমানী হাসপাতালের হৃদরোগ, গাইনিসহ বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন ও রোগীদের সাথে কথা বলেণ সেলিনা মোমেন। এ সময় তিনি অপরিচ্ছন্ন নোংরা পরিবেশ ও নানা অব্যবস্থাপনা প্রত্যক্ষ করে ক্ষুব্ধ হন। এছাড়া এক্সরে, প্যাথলজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষার (টেস্ট) জন্য সাধারণ মানুষকে বাইরে পাঠানো হচ্ছে, এমনটাও দেখতে পান তিনি।
ক্ষুব্ধ সেলিনা মোমেন পরে নিজের আসল পরিচয়ে ওসমানী হাসপাতালের পরিচালকের সাথে দেখা করতে তার কক্ষে যান। তবে পরিচালক ছুটিতে থাকায় উপপরিচালক হিমাংশু লাল রায়ের সাথে দেখা করেন তিনি। এ সময় হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, অপরিচ্ছন্নতা প্রভৃতি বিষয়ে উপপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সেলিনা মোমেন। তিনি বলেন, সরকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে, কিন্তু ওসমানী হাসপাতালে এসে মানুষ কেন এর সুফল পাবে না।