সারা বাংলা
সন্তানের জন্য শীতবস্ত্র চুরি করে ধরা পড়লেন বাবা
কিশোরগঞ্জে শিশু সন্তানের জন্য শীতবস্ত্র চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন হতভাগ্য এক পিতা। উপস্থিত লোকজন তাকে আটক করে গণধোলাই দিতে গেলে কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য এগিয়ে আসেন। পরে ওই পিতাকে শীতবস্ত্রটি কিনে দেন পুলিশ সদস্য।
বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরগঞ্জের আদালত প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, আদালত প্রাঙ্গণে শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন শহরতলীর কলাপাড়া এলাকার মো. রনী চৌধুরী। তার বাহারি সব শীতবস্ত্রের সম্ভার থেকে এক ব্যক্তি একটি স্যুয়েটার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। হাতেনাতে চোর ধরার পর গণধোলাইয়ের মতো পরিস্থিতির মুখে পড়েন শীতবস্ত্র চুরি করা মধ্যবয়সী ব্যক্তিটি। তৈরি হয় ‘চোর’ ব্যক্তিকে ঘিরে জটলা। মানুষের জটলা দেখে সেখানে এগিয়ে যান আদালতে কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল মো. আব্দুল বাতেন। জানতে পারেন, লোকটি তার সন্তানের জন্য একটি গরম কাপড় চুরি করায় গণধোলাইয়ের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ভীড়ের ভেতর থেকে বের করে এনে কনস্টেবল মো. আব্দুল বাতেন লোকটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, হতদরিদ্র এই লোকটির শিশু সন্তান শীতে কষ্ট করছে। কিন্তু শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই তার। তাই বাধ্য হয়ে সন্তানের জন্য একটি স্যুয়েটার চুরি করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য! চুরির অভ্যাস না থাকায় তিনি ধরা পড়ে গেছেন। প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে ওই বাবাকে রক্ষা করার পাশাপাশি তার সন্তানের শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগী হন মানবিক এই পুলিশ সদস্য। তিনি শীতবস্ত্র ব্যবসায়ীকে নিবৃত্ত করে তার হাতে শীতবস্ত্রের মূল্য হিসেবে কিছু টাকা তুলে দেন। গণধোলাই থেকে রেহাই পাওয়ার পাশাপাশি সন্তানের জন্য শীতবস্ত্র পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন ওই বাবা। তার চোখ-মুখে ঠিকরে পড়ে খুশির আভা। তিনি পুলিশ সদস্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুদ্ধশাসে ছুটে চলেন বাড়ির দিকে। এ ব্যাপারে কনস্টেবল (নং-৮৯৯) মো. আব্দুল বাতেন বলেন, অসহায় লোকটি তার শিশু সন্তানের জন্য শীতবস্ত্র চুরি করছিল জেনে, খুব কষ্ট লাগছিল। তাকে বাঁচাতে পারার পাশাপাশি তার সন্তানের শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা করে দিতে পারায় খুব ভাল লাগছে। মনে হচ্ছে, একটি ভাল কাজ করতে পারলাম।