আজকের সিলেট

জগন্নাথপুরে হায়দর খুন : ২০ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

ওসমানীনগর প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের আশারকান্দি ইউপির দাওরাই গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হবার ২০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও হত্যাকান্ডের সাথে জড়ির মূল হোতারা এখনো ধরা পরেনি। মামলার এজাহারভুক্ত ৯ আসামী সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮জনকে আসামী করা হলেও হত্যাকান্ডের সরাসরি জড়িত কিংবা অজ্ঞাতনামা কাউকে রহস্যজনক কারণে এখন পর্যন্ত পুলিশ গেফতার করতে পারেনি।

ঘটনার দিন রাতে পুলিশ হত্যাকারীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উত্তর দাওরাই গ্রামের ওয়ারিছ উল্যার স্ত্রী সিতারা বেগম(৪৮)কে আটক ও তাদের বসত ঘর থেকে কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার ছাড়া এখন পর্যন্ত এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার পুলিশর আর কোনো অগ্রগতি নেই।

মামলার বাদী সহ নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আসামী ধরতে পুলিশকে তাগিদ দেয়া হলেও পুলিশ আসামীদের ধরছে ধরছে বলে ২০ দিন চলে গেছে। পুলিশের এমন আচরণ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৯ জুন নিহত হায়দর আমিনের ছোট ভাই উত্তর দাওরাই গ্রামের আখলিছ মিয়ার ছেলে বদরুল আমিন বাদি হয়ে জগন্নাথপুর থানায় গফুর মিয়াকে প্রধান আসামী ও ৯জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে হত্যা (মামলা নং-০৬) দায়ের করে।

একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় পুলিশের এমন ভুমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন মামলার বাদী বদরুল আমিন। পুলিশ বিভাগের দক্ষতা ও অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকার পরও কেন এখন পর্যন্ত কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি কেনইবা মামলা তদন্তে ধীর গতি পরলিক্ষিত হচ্ছে সে ব্যাপারে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

হায়দার হত্যা মামলার বাদী বদরুল আমিন বলেন, আব্দুল গফুর, আব্দুল ওয়াহিদ, ফয়জুল ইসলাম, জিলু মিয়া গংরা আমার ভাইকে হত্যা করে বীরদর্পে তারা এলাকা ছেড়ে চলে গেলো পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মূল হত্যাকীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। আমার ভাইয়ের খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবী জানাচ্ছি।

নিহত হায়দর আমিনের স্ত্রী আছমা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে নির্মমভাবে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হলো কিন্তু আজ ২০ দিন হয়ে গেলো পুলিশ আমার স্বামীর হত্যাকারীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। আমি তিনটি শিশু সন্তানকে নিয়ে আজ অসহায়ের মতো দিন কাটাচ্ছি আমার সন্তানরা কি পিতা হত্যার বিচার পাবে না?

জগন্নাথপুর থানার ওসি ইখতেয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলার আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব শিগগিরই আসামীরা পুলিশের খাঁচায় ধরা পরবে। হায়দার হত্যা মামলায় নয়ছয় বা হেরফের করার কোনো সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকত উল্যাহ খানের সাথে যোগাযোগহ করা হলে তিনি বলেন, তাঁর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ জুন ঈদুল ফিতরের পরের দিন সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আশারকান্দি ইউপির উত্তর দাওরাই গ্রামের আব্দুল গফুর, আব্দুল ওয়াহিদ, ফয়জুল ইসলাম, জিলু মিয়া গংরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়ির পানি নিষ্কাশনকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের পাশের বাড়ির আখলিছ মিয়ার ছেলে হায়দার আমিন সহ তাদের চার ভাইয়ের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে হায়দর আমিন সহ তারা চার ভাই গুরুতর আহত হয়। মুমুর্ষ অবস্থায় হায়দর আমিনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৬ জুন রাত ৮টার দিকে হায়দর আমিন মারা যান।

আরও সংবাদ

Close