আজকের সিলেটমৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারে সিনিয়র-জুনিয়র দন্দ্বে বন্ধুদের হাতে খুন হয় স্কুলছাত্র রকি
মৌলভীবাজারে সিনিয়র-জুনিয়র দন্দ্ব নিয়ে বন্ধুদের হাতে খুন হয়েছে ইব্রাহীম মিয়া রকি (১৫) নামে এক স্কুলছাত্র। বিরোধের জের ধরে তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়।
গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) শ্রীমঙ্গল উপজেলায় চা বাগানের গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের একদিনের মধ্যেই ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
ওই দিন রাতেই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সনাক্ত করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। পরে শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান রোডস্থ খাসগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাব্বির মিয়া ও ফয়সাল মিয়া নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) গ্রেপ্তার ওই দুই যুবককে মৌলভীবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে তারা জানায়, মো. ইব্রাহিম মিয়া রকি ও সাব্বির মিয়া একে অপরের বন্ধু। আনুমানিক এক মাস পূর্বে তাদের দুইজনের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে বিরোধ ঘটে। বিষয়টি নিয়ে একপর্যায়ে তাদের উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এভাবেই কেটে যায় এক মাস। এই সময়ে উভয়ের মধ্যে কোনো কথাবার্তা কিংবা যোগাযোগও ছিল না। তবে সাব্বির মিয়া প্রতিশোধ নিতে মনে মনে সুযোগ খুঁজছিল।
একপর্যায়ে গত ১৩ জানুয়ারি সাব্বির বন্ধু রকিকে হত্যার ছক আঁকে। এরই ধারাবাহিকতায় সাব্বির তার অপর বন্ধু ফয়সালকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন রোডে দেখা করে রকিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সাব্বির রকির মুঠোফোনে কল দিয়ে তার অবস্থান জিজ্ঞেস করে। এ সময় রকি জানায়, সে রেলগেট এলাকায় অবস্থান করছে। পরে সাব্বির ও ফয়সাল শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ রোডের রেলগেট এলাকায় এসে রকিকে একটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবার কথা বলে কৌশলে দক্ষিণ ভাড়াউড়া এলাকার চা বাগানে নিয়ে যায়। আর সেখানেই তারা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে বাস্তবে রূপ দেয়।
জবানবন্দিতে তারা আরও জানায়, ভাড়াউড়া চা বাগানে নিয়ে সাব্বির প্রথমে হাত দিয়ে রকির মুখ চেপে ধরে। পরে ফয়সাল মিয়াও তাকে ধরে ফেললে সাব্বির রকির মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়। এরপর একই স্কচটেপ গলায় পেঁচিয়ে সাব্বির প্রায় ১০ মিনিট রকির গলা চেপে ধরে তার বুকের ওপরে বসে থাকে। এ সময় ফয়সাল মিয়া রকির পা চেপে ধরে রাখে। পরবর্তীকালে রকি নিস্তেজ হয়ে পড়লে সাব্বির ও ফয়সাল জ্যাকেট ধরে টেনে তাকে একটি গাছের কাছে নিয়ে আসে। এ সময় রকির প্যান্টের বেল্ট তার গলায় পেঁচিয়ে ওই গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে তারা। সবশেষে দুজনে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়