আন্তর্জাতিকশীর্ষ খবর
চীনে ৫০০ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর আকুতি
চীনের প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ জনে। এছাড়াও ভাইরাসটি দেশটির নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। আর এতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১২৮৭ জন।
দেশটির হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই ভাইরাস ছড়ানো শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রেখেছে চীন। ফলে সেখানে আটকা পড়েছেন অন্তত ৫০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।
উহানে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন।
রাকিবুল তূর্য (২৩) নামে এক শিক্ষার্থী মেকানিক্যাল অ্যান্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি উহানে তাদের অবস্থা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সম্প্রতি চায়নায় ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শহর উহানে আমি বাস করছি। এখানে আমরা প্রায় ৫০০ জনেরও অধিক বাংলাদেশি উহানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যায়নরত। উহান থেকে বহির্গামী সব বাস-ট্রেন এবং বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন মারা গেছে এবং ৬০০-এরও বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছে। আমরা চাইলেও এখন নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছি না।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আমাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে এমন নিউজ বাংলাদেশের মিডিয়ায় প্রচার করা হলেও এ খবর ভিত্তিহীন। আমাদের এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার খোঁজ নেয়া হয়নি। আমরা সবাই কঠিন মুহূর্ত পার করছি। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সবাইকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করেন।’
ইমশিয়াত শরিফ নামের পিএইডি করতে যাওয়া এক বাংলাদেশি তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ‘চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস ভয়াবহভাবে ছড়াচ্ছে। স্থানীয় সরকার বাস, ট্রেন, বিমান সব বন্ধ করে দিয়েছে। দোকানপাট বন্ধ। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। এদিকে ইউনিভার্সিটিতে চলছে শীতকালীন ছুটি। ফলে ক্যাস্পাস ফাঁকা, উহান শহরটা একদম জনশূন্য। আতঙ্ক এবং উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তবুও থেমে নেই জীবন। চলছি চলার মতো করে।’
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হলো জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি। অসুখ আরো বাড়লে কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। করোনা ভাইরাস মরণব্যাধি। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি।
পরিস্থিতি সামলাতে গণপরিবহন বন্ধ করায় উহান ও পার্শ্ববর্তী হুয়াংগ্যাং শহরের অন্তত দুই কোটি বাসিন্দা কার্যত আটকা পড়েছে। উহানের সঙ্গে বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।