আজকের সিলেটসিলেটের টুকরো খবর
বিশ্বনাথে চিকিৎসার নামে দেড় বছর আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ : স্ত্রীসহ কবিরাজ কারাগারে
সিলেটের বিশ্বনাথে অসুস্থ এক তরুণীকে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে চিকিৎসার কথা বলে প্রায় দেড় বছর ধরে ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক কথিত কবিরাজের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই কবিরাজ ও তার স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আটকরা হলেন- বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে কবিরাজ কমরুদ্দিন (৫০) ও তার স্ত্রী সুমি বেগম (৪০)। তারা বিশ্বনাথ পুরান বাজার (শরীষপুর) এলাকার আছদ্দর ম্যানশনে ভাড়া বাসায় ‘সিফা তদবিরালয়’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে রমরমা কবিরাজি ব্যবসা ও নানা কুকর্ম করে আসছিলেন।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর মা বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে আমার বড় মেয়ে নানা রকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তাকে নিয়ে কবিরাজ কমরুদ্দিনের শরণাপন্ন হই। চিকিৎসার প্রয়োজনে আমার মেয়েকে তার কাছে রেখে যেতে এবং নগদ ১০ হাজার টাকা দিতে বলেন। কবিরাজের কথা মতো টাকা পরিশোধ করে মেয়েকে তার কাছে রেখে আসি।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে মেয়েকে আনার জন্যে সিফা তদবিরালয়ে যাওয়ার পরই ঘটে বিপত্তি। কবিরাজ মেয়েকে আমার কাছে ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। নানা হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখান এভাবে প্রায় দেড় বছর ধরেই সিফা তদবিরালয়ে মধ্যে তালা দিয়ে ঘরে আটকে রাখে আমার মেয়েকে। আমি কবিরাজের ভয়ে কাউকে কিছু বলার সাহস পাইনি।
পুলিশ জানায়, উদ্ধারের পর ওই তরুণী জানিয়েছে- কবিরাজ কমরুদ্দিন চিকিৎসার নামে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তাকে দিনরাত ঘরের ভেতর তালা দিয়ে আটকে রাখতেন। কোথাও বের হতে দিতেন না। সম্প্রতি কমরুদ্দিন ভুয়া বিয়ের কাগজ তৈরি করে তাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন।
সিফা তদবিরালয়ের আশপাশে বসবাসকারী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কমরুদ্দিনের সিফা তদবিরালয়ে মূলত সুন্দরি তরুণী-যুবতীদের আনাগোনাই ছিল বেশি। এর আগেও তিনি পলি নামে একটা মেয়েকেও এভাবে তার বাসায় আটকে রেখেছিলেন।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মূসা বলেন, ওই তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে কথিত কবিরাজ কমরুদ্দিন ও তার স্ত্রী সুমি বেগমকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।