আজকের সিলেট

হাত ধোয়ার পানি নেই কাজীটুলার বাসিন্দাদের

হাত ধোয়ার পানি নেই কাজীটুলার বাসিন্দাদের। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঠেকাতে যখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে ঠিক এমন মুহুর্তে পানিই পাচ্ছেন না উত্তর কাজীটুলা এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবারের মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার তারা জনপ্রতিনিধিসহ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পানি সরবরাহ শাখায় যোগাযোগ করেও সমাধান পাননি। এমন অবস্থায় গত এক সপ্তাহ ধরে পানির তীব্র যন্ত্রণায় আছেন। করোনা প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সকল মহলই যেখানে ঘন ঘন হাত ধোয়ার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে তখন উত্তর কাজীটুলা এলাকাতে হাত ধোয়ার জন্য সামান্য পানিও মিলছে না।

ওই এলাকায় পানির সংকট এবারই প্রথম নয়, দীর্ঘদিন ধরে বাসিন্দারা এ সমস্যায় রয়েছেন।

জানা গেছে, নগরীর উত্তর কাজীটুলা এলাকাতে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের বসবাস। তারা নিয়মিত পানির বিল সরবরাহ করে আসছেন। মাসের পর মাস পানির বিল পরিশোধের পরও তারা মাসের এক সপ্তাহও ঠিকঠাক পানি পাচ্ছেন না। শাহী ঈদগাহ ময়দানের ‘আল্লাহু চত্বর’ সংলগ্ন পানির পাম্প থেকে এই এলাকায় পানির সরবরাহ করা হয়। পাম্প থেকে আশেপাশের অন্যান্য এলাকাতেও পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এজন্য পাম্পের উপর বেশি চাপ পড়ে। নিয়মিতই পানির মোটর নষ্ট থাকে। এখানে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় পানিও উত্তোলন কমে গেছে। পাম্পটির অবস্থান উত্তর কাজীটুলা এলাকার ভূমি থেকে বেশ নিচুতে। এসব কারণে উত্তর কাজীটুলার এলাকার বাসিন্দারা নিয়মিত পানি পান না। এমনও ঘটনা এখানে ঘটেছে পানির সরবরাহ না থাকার কারণে এখানে মৃতদেহকে পার্শ্ববর্তী একটি মিনারেল ওয়াটার কোম্পানির পানি আনিয়ে গোসল করাতে হয়েছে। এসবের পরেও মেয়র থেকে কাউন্সিলর কেউই এলাকাবাসির পানির সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান দিতে পারেননি। এলাকার মানুষ পানি না পেয়ে ক্রমশ ক্ষোভে ফুঁসে ওঠছেন।কয়েকদিন আগে এলাকার নারীরা পানি না পেয়ে শাহী ঈদগাহের পানির পাম্পে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। তখন কাউন্সিলরের মধ্যস্থতায় বিষয়টি আপাতত শান্ত হয়। কিন্তু এখনও স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি।

সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল থেকে পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এলাকাবাসী পানির জন্য হাহাকার করেছেন। কেউ রান্নাবান্না, গোসল, কাপড়ধোয়াসহ অন্য জরুরি কাজ করতে পারেননি। পরে সন্ধ্যার দিকে আপনার নগরভবনে কাউন্সিলরের মাধ্যমে জানানো হলে পানির গাড়ি পাঠিয়ে আপাতত সমস্যার সমাধান করা হয়। বলা হয় রাতের বেলা পানি দেয়া হবে। কিন্তু পানি দেয়া হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে জামিল আহমদ, এহিয়া আহমদসহ বেশ কয়েকজন একাত্তরের কথাকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে পানির সমস্যায় জর্জরিত। বিল দেয়ার পরও আমরা ঠিকমতো পানি পাচ্ছি না। বারবার পানির পাম্পের মোটর নষ্ট হয়ে যায়। পানির লেয়ার নিচে নেমে যায়। এই বাহানা তো ওই বাহানা। করোনার মতো দুর্যোগেও আমরা প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছি না।’

এ বিষয়ে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. রাশেদ আহমদ বলেন, ‘আমরা উত্তর কাজীটুলাবাসীর এ সমস্যাটি সমাধানে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। মেয়র মহোদয়ও সমস্যাটি অবগত রয়েছেন। আমরা আশাবাদী খুব দ্রুত সমস্যার সুন্দর সমাধান হবে।’

আরও সংবাদ

Close