আজকের সিলেট

ওসমানীনগরে স্ত্রীর পরকিয়া দেখে ফেলায় স্বামীর গলায় পাথর বেঁধে নদীতে ফেলে খুন

সিলেটের ওসমানীনগরে স্ত্রীর অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে ফেলায় সাজেন্দ্র দাসকে গলায় পাথর বেঁধে নদীতে ফেলে খুন করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ দু’জনের দীর্ঘ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।

ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেওয়া দু’জন হলেন- ওসমানীনগর থানার মোবারকপুর গ্রামের সুশিল দাসের ছেলে গোপাল দাস (২৯) এবং একই থানার খাডুকোনা গ্রামের অতুল দাসের ছেলে স্বপন দাস (৩০)।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সজেন্দ্র হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সন্ধ্যা রানী দাসকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

জবানবন্দিতে তারা জানায়, নিহতের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী দাসের সাথে তাদের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। হত্যাকাণ্ডের আগে তাদের সাথে যৌনসম্পর্ক দেখে ফেলেন ও স্ত্রীকে মারধর করায় পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ খুন করার পর সজেন্দ্র দাসের লাশের গলায় পাথর বেধে নদীতে ফেলে দেয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন কথা জানায় নিহতের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী দাস, সন্ধ্যা রানীর কথিত প্রেমিক উপজেলার কারিকোনা গ্রামের অতুল দাসের ছেলে স্বপন দাস ও একই ইউপির মোবারকপুর গ্রামের সুশিল দাসের ছেলে গোপাল দাস।

ওসমানীনগর থানার ওসি (তদন্ত) এসএম মাইন উদ্দিন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রতন লাল দেব জানান, আসামিরা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন এবং ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে জানায়। পরে সিলেটে আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা।

এর আগে মঙ্গলবার ভোরে নিহত সজেন্দ্র দাসের বড় ভাই সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর ইউপির চকিয়া গ্রামের মৃত নরেন্দ্র দাসের ছেলে রাকেশ দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে ওসমানীনগর থানায় (মামলা নং-০৪) দায়ের করেন।

এদিকে গত সোমবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের পর সৎকার করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ রাত ১০টার দিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর ইউপির চকিয়া গ্রামের মৃত নরেন্দ্র দাসের ছেলে সজেন্দ্র দাস তার শ্বশুরবাড়ি ওসমানীনগর উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির মোবারকপুরস্থ বাড়ি থেকে সহকর্মীদের সঙ্গে মাছ ধরতে বের হয়ে নিখোঁজ হন।

এরপর গত ৩ মার্চ নিহতের সম্পর্কীয় ভাগ্নে নেপাল দাস বাদি হয়ে সজেন্দ্র নিখোঁজের ব্যাপারে ওসমানীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।

নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর গত রোববার দুপুরে গলায় রশি দিয়ে পাথর বাধা সজেন্দ্রের লাশ উপজেলার সাদিপুর ইউপির সাদিপুর সেতুর পূর্ব পাশে সাদি খাল থেকে উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।

আরও সংবাদ

Close