আজকের সিলেটপ্রবাস
সিলেটে ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে স্থাপনা, চত্বর ও সড়কের নামকরণের দাবি
সিলেটে প্রয়াত ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় স্থাপনা, চত্বর ও সড়কের নামকরণের দাবী জানিয়েছেন ক্যাম্পেইন ফর রিকগনিশন-নামক লন্ডনভিত্তিক একটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ২৮ জুলাই মঙ্গলবার দুুপুরে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের অন্যতম সদস্য সৈয়দ হাসান আহমদ। বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ক্যাম্পেইন ফর রিকগনিশন-এর সদস্য সর্বজনাব আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ শাহজাহান, মতিউর রহমান মতিন ও মিসবাহুর রহমান মিসবাহ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনা, সড়ক ও চত্বরের নামকরণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহ আলোচনা হচ্ছে। আমরা বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাই। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এ জনপদের কয়েকজন খ্যাতিমান সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করছি। যাঁরা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন করেছেন, পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে ভুমিকা রেখেছেন, যুদ্ধ করেছেন। তাঁদের মতো ব্যক্তিগণ যুদ্ধ জয় করে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের বাঙালির স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রগঠনে গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছেন। যা আজ ইতিহাসে অমলিন চিরঞ্জীব হয়ে আছে। তাঁদের মতো অদম্য সাহসী সর্বজন শ্রদ্ধেয়দের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভিন্ন সড়ক, স্থাপনা ও চত্বর ইত্যাদি তাঁদের নামে নামকরণ করা। আমরা ১০জন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির নাম উপস্থাপন করলাম। নামগুলো হলো:
১. দেওয়ান ফরিদ গাজী, ২. পীর হাবিবুর রহমান, ৩. আব্দুল হামিদ, ৪. মুক্তিযোদ্ধা আখতার আহমদ, ৫. আব্দুন নুর মাস্টার, ৬. বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, ৭. এডভোকেট আ ফ ম কামাল, ৮. মুক্তিযোদ্ধা ম.আ. মুকতাদির ৯. কবি দিলওয়ার, ১০. অধ্যক্ষ হুসনে আরা আহমদ। উল্লিখিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ স্ব-মহিমায় মহিমান্বিত। তাঁরা তাঁদের সমগ্র জীবন দেশ-সমাজ, জাতি-ধর্ম ও জনগণের অধিকার, মত আর কর্তৃত্বপ্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে উৎসর্গ করে গেছেন। তাঁদের আমরা স্মরণীয় করে রাখতে চাই। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, ইতোমধ্যে উল্লেখিত ১০ জনের নামসম্বলিত একটি আবেদন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এতে বিষয়টি উপলব্ধি করে যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে সিলেটবাসীকে কৃতজ্ঞ করতে মেয়রের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এক প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন, আমরা মরহুম অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও মরহুম স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর মতো গুণীজনের নাম এই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করিনি। কারণ এই গুণীজনের নামে সিলেটে বিভিন্ন স্থাপনা আছে। আমরা শুধু তাঁদেরই বেছে নিয়েছে; যেসকল গুণীজনের নামে কোনো সড়ক, চত্বর কিংবা স্থাপনা নেই।
আরো একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিলো, তালিকায় কেন সিলেটের কোনো আলেম বা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের নাম রাখা হয়নি। জবাবে তাঁরা বলেন, আপাতত তাঁরা তালিকা ১০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। কারণ তালিকা বেশি দীর্ঘ হয়ে গেলে এই দাবী গুরুত্বহীন হয়ে পড়তে পারে। ভবিষ্যতে ধাপে ধাপে আরো গুণীজনের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হবে। তবে ধর্মীয় ব্যক্তিদের নামকরণের দাবী তুললে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে বলেও আপাতত তাঁরা বিরত থাকছেন বলে উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকরা বলেন, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অসাম্য অবদান রেখেছেন এমন অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ প্রয়াত হয়েছেন। তাঁদের নামে যেন ভবিষ্যতে বাংলা টাউন এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও স্থাপনার নামকরণের দাবী তোলা হয়। জবাবে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে পর্যায়ক্রমে তা করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।