শীর্ষ খবর
এইচএসসি পরীক্ষার কি হবে?
এইচএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পর্যায়ের উচ্চ শিক্ষার পথ নির্ধারিত হয়। সে কারণে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল।
চলমান করোনাভাইরাস মহামারী পুরো বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে ফেলে দিয়েছে। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরীক্ষা। সরকার ইতোমধ্যে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা না নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার কি হবে? এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রাপ্ত জিপিএ’র উপর নির্ভর করে একজন শিক্ষার্থী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। অর্থাৎ এ দু’টি পরীক্ষার উপরই পুরোপুরিভাবে একজন শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা নির্ভরশীল।
গত ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তা স্থগিত রয়েছে। কবে নাগাদ পরীক্ষা হতে পারে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। ফলে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। তাদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও।
এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ না কমলে এবং এবার এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে বিকল্প মূল্যায়ন কী হতে পারে, সেই প্রস্তাব তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
এছাড়া মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে তুলতে কোন বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা যায়, সেই প্রস্তাব তৈরি করতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মহামারীকালে এবং পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর ও সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় শিক্ষামন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয় সেক্ষেত্রে এইচএসসি পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণের বিষয়ে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি কী হতে পারে সে বিষয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন কার্যক্রম আরও ফলপ্রসূ করার ওপরও সভায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান এই সভায় যুক্ত ছিলেন।
দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে গত ১৭ মার্চ থেকে। বৃহস্পতিবার সেই ছুটির মেয়াদ ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে, মহামারীর কারণে এবার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা এবং অষ্টমের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা হবে না।
পঞ্চমের শিক্ষার্থীদের স্কুলে স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হলেও অষ্টমের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কী করা হবে, সে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
মহামারী শুরুর আগেই এবারের এসএসসি পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের ফল ঘোষণা করে এখন অনলাইনে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম চলছে।
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় টেলিভিশন ও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এখনও এর বাইরে রয়ে গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “এবার ১৪ লাখের মতো শিক্ষার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কথা। এরপর তারা স্নাতক পর্যায়ের লেখাপড়ায় যাবে। পরীক্ষা নেওয়া না গেলে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি তৈরির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের ওই বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে।”