শীর্ষ খবর
দলবেঁধে ধর্ষণের ১৩ বছর পর ফাঁসির রায় : ১৮ বছর পর খালাস
দেড় যুগ আগে নেত্রকোনার পূর্বধলায় এক কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বিচারিক (নিম্ন) আদালত পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন। সেই আসামিরা হাইকোর্টের দেয়া রায়ে খালাস পেয়েছেন।
খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- জেলার পূর্বধলা উপজেলার কালডোয়ার গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে শামীম, মন্তোষ রংদির ছেলে ভিকন ও টিকন, মৃত নরেন্দ্র শ্যামের ছেলে তাপস, বুধি গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে রূপ মিয়া।
রায়ের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম মোজাম্মেল হক রানা সিদ্দিকী ও আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান রহি।
ডেথ রেফারেন্স ও এ সংক্রান্ত জেল আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোজাম্মেল হক রানা বলেন, এ রায়ের বিষয়ে আপিল করার বিষয়টি বিবেচনার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস বরাবরে নোট দেয়া হবে।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম মোজাম্মেল হক রানা সিদ্দিকী। আসামিপক্ষে ছিলেন এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ, এ এম মাহবুব উদ্দিন, বজলুল কবির, আফিল উদ্দিন, সাকিব মাহবুব ও সাইফুর রহমান রাহি এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এস এম শফিকুল ইসলাম।
আইনজীবীরা জানান, প্রায় ১৮ বছর আগে নেত্রকোনায় কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় সব আসামিদের হাইকোর্ট খালাস দিয়েছেন।
সাইফুর রহমান রাহি বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ায় আদালত আসামিদের খালাস দিয়েছেন। এছাড়া মেডিকেল রিপোর্ট যথাযথ না হওয়াই এমন ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন নেত্রকোনার বিচারিক (নিম্ন) আদালত।
আইনজীবীরা জানান, জেলার সদর উপজেলার এক কিশোরী ২০০২ সালের ২০ জুলাই মা ও দুলাভাইয়ের সঙ্গে পূর্বধলা উপজেলার সাত্যাটি গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানোর উদ্দেশে রওয়ানা হয়। তারা পূর্বধলার কুমারকালী ব্রিজে পৌঁছালে আসামিরা রিকশার গতিরোধ করেন। এ সময় কিরোরীর মা ও দুলাভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যেতে বাধ্য করেন। এরপর আসামিরা ভুক্তভোগীকে নির্জনস্থানে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করেন।
ঘটনার পরের দিন ২০০২ সালের ২১ জুলাই ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মামলার অভিযোগে ওই কিশোরী বলে, আসামিরা ঘটনার পর তাকে একটি বিলের পানিতে নামিয়ে গোসল করায়।
এরপর ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন নেত্রকোনার বিচারিক আদালত। ওই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের আসামিরা আপিল করেন এবং ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। সেসবের শুনানি নিয়ে আজ হাইকোর্ট পাঁচ আসামিকে খালাস প্রদান করলেন।