শীর্ষ খবর

প্রভাব খাটিয়ে অস্ত্র নিয়ে ছাত্রাবাসে থাকতো ছাত্রলীগ : নির্বিকার কর্তৃপক্ষ

করো’না পরিস্থিতির কারণে ৩১ মা’র্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। এর পরপরই বন্ধ করে দেওয়া হয় সিলেটের এমসি (মুরারি চাঁদ) কলেজও। একইসঙ্গে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সরকারের নির্দেশনা থাকার পরেও এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে প্রভাব খাটিয়ে অ’স্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীরা থাকতো বলে জানা গেছে। বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের জানা থাকলেও এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রাবাসে ছিলেন। এরই মধ্যে শুক্রবার কলেজ ছাত্রবাসে ঘটে ধ’র্ষণের ঘটনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে, দুপুরে সিলেট মহানগর পু’লিশ কমিশনার গো’লাম কিবরিয়াসহ পু’লিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে।

এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘করো’না পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয় নোটিশ দিয়ে। তবে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশুনার পাশাপাশি চাকরি ও টিউশনি করে। তারা ছাত্রাবাসে থাকার জন্য হোস্টেল সুপারের মাধ্যমে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছিল। তখন আমি হোস্টেল সুপারকে বলেছি, যারা বৈধ তাদের কয়েকজনকে ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ করে দিতে। ছাত্রবাস খোলা থাকলেও ডাইনিং ও গ্যাস ব্যবহার করতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ছাত্রাবাসের ৬টি ব্লক ও পূর্ব দিকে একটি ৪তলা ভবন রয়েছে। সেখানে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী থাকতো। কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ হওয়ার পর মানবিক দিক বিবেচনা করে ছাত্রাবাসে প্রায় ২০-৩০ জনকে থাকাতে মৌখিকভাবে বলা হয়। বহিরাগত কেউ থাকছে কিনা বা কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্দেশনা মানছে কিনা সে বিষয় দেখতেন হোস্টেল সুপার। শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষ তল্লা’শি করে বন্ধ করা হয়। শনিবার দুপুরের মধ্যে পুনরায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে পুরো ছাত্রাবাসে তল্লা’শি চালানো হবে। এরপর সবকটি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হবে।

হোস্টেল সুপার বিষয়টি দেখার পরেও কী’ভাবে ছাত্রাবাসের কক্ষে অ’স্ত্র নিয়ে অবস্থান করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কাছে র’হস্যজনক মনে হচ্ছে। আম’রা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যদি কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার বি’রুদ্ধে কলেজের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে আমাদের কলেজের কয়েকজন শিক্ষক নানা বিষয় মা’থায় রেখে ত’দন্ত করে দেখছেন।’

ছাত্রাবাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রাবাসের থাকলেও তারা চাকরি ও টিউশনি করি। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই তারা ছাত্রাবাসে থাকছেন। তবে ছাত্রাবাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাড়া বহিরাগত প্রায় ১০-১৫ জন ছিল। এরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অ’প’রাধ কর্মকা’ণ্ড করলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপারে নির্বিকার থাকতো। এ বিষয়ে হোস্টেল সুপারকে অবগত করলেও তেমন কোনও লাভ হয়নি। যদি ওই সময়ে বহিরাগতসহ যারা নিয়ম না মেনে ছাত্রাবাসে বিশৃঙ্খলা করছে তাদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো তাহলে ছাত্রাবাসের ভেতরে ধ’র্ষণের মতো ঘটনা ঘটতো না।

আরও সংবাদ

Close