শীর্ষ খবর

৬ পুলিশ নজরে থাকলেও আকবর কিভাবে পালালো?

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ৭ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ৬ জন এখন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে রয়েছেন।

ঘটনার পরপর উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ ওই ফাঁড়ির চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এরপর থেকেই লাপাত্তা এসআই আকবর। তার মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। আকবর কিভাবে লাপাত্তা হলেন- এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনো কর্মকর্তার সুনির্দিষ্ট মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে তার খোঁজে সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিস) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া ওই পুলিশ সদস্যের পালিয়ে থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া আকবর বাদে অভিযুক্ত বাকি পুলিশ সদস্যদের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কাছে হস্তান্তরে তারা প্রস্তুত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আকবর ছাড়া বাকিরা আমাদের হাতে রয়েছে। পিবিআই যখনই তাদের চাইবে, তখই অফিসিয়ালি হস্তান্তর করবো। যে একজন পলাতক, তাকে ধরার চেষ্টা চলছে। পিবিআইও ধরার চেষ্টা করবে। সে যেন পালাতে না পারে, এজন্য সবকটি ইমিগ্রেশনেও চিঠি দেওয়া আছে।’

এদিকে, আকবর হোসেনের লাপাত্তার ঘটনায় চলছে কানাঘুষা। কেউ বলছেন, তিনি পুলিশের হাতের মুঠোয় রয়েছেন। আবার পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, তাকে ধরতে সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। অনেকের দাবি বরখাস্ত করার পর যদি আকবরকে কঠোর নজরদারীতে রাখা হতো তাহলে সে পালাতে পারতো না।

রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো অপরাধী ছিল না। তাকে মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য নির্যাতন করে মেরেছে। কিন্তু এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত কোনো পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমি হত্যার বিচার চাই। পুলিশ পারে না এমন কোনো কাজ নেই। তাই পালিয়ে যাওয়া আকবরকেও খুঁজে বের করতে অনুরোধ জানাই।’

উল্লেখ্য, ১১ অক্টোবর ভোরে মৃত্যু হয় স্বাস্থ্যকর্মী রায়হান আহমদের (৩৪)। নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে তার পরিবার। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসএমপির তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্তেও ফাঁড়িতে নির্যাতনের পর মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ পায়।

এ ঘটনায় করা মামলা বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিশেনের (পিবিআই) হাতে রয়েছে। নথি পাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নিহতের স্বজন এবং কাস্টঘর এলাকার দুই সুইপারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এছাড়া রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তও করা হয়েছে। ময়না তদন্তে তার শরীরে নির্যাতনের শতাধিক চিহ্ন মিলেছে। আর অতিমাত্রায় ‘নির্যাতনের কারণেই’ তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরেনসিক চিকিৎসক।

আরও সংবাদ

Close