শীর্ষ খবর

লালমনিরহাটের ঘটনায় তিনটি মামলা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে আবু ইউসুফ শহিদুন্নবী জুয়েল নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার দু’দিন পর এ ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

শনিবার (৩১ অক্টোবর) রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা ও রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি, বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়েছে। আর পুলিশ বাদী হয়ে অপর মামলাটি দায়ের করে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে আমরা খুঁজে বের করবো এবং যার জন্য যতটুকু শাস্তি প্রযোজ্য, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর সম্পন্ন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়েছে। এ ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা, এটি করেছেন নিহতের আত্মীয়। অপরটি ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুরের মামলা, সেটি করেছেন বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং আরেকটি এ ঘটনায় বাধা দিতে গিয়ে পুলিশ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলা। এ মামলাটি করেছে পুলিশ। এসব মামলায় যাদের আমরা এরই মধ্যে শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদের আসামি করা হয়েছে। বাদ বাকি আসামিদের আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।

ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, আমরা মনে করি, এ ঘটনায় কারও না কারও ইন্ধন রয়েছে। নাহলে এমন একটা তুচ্ছ ঘটনা, যেটা কিনা ঘটনাই নয়, সেটা নিয়ে এমন বড় কিছু হওয়ার কথাই নয়। যারাই থাকুক ঘটনার সামনে কিংবা পেছনে, তাদের খুঁজে বের করা হবে।

এ সময় বিভাগীয় কমিশনার ও ডিআইজি পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং এ ঘটনার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবহিত হন। পরে পাটগ্রাম থানার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন নাহার সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন।

নিহত আবু ইউসুফ শহিদুন্নবী জুয়েলের পরিবার যে হত্যা মামলাটি দায়ের করেছে সেটিতে কতজনকে আসামি করা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ঘটনায় বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নওয়াজ নিশাত বাদী হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে যে মামলাটি দায়ের করেছেন তাতে ২২ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ এবং আরও অজ্ঞাত ৫শ’ থেকে ৬শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে। তার মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হামিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে। চেয়ারম্যান তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, হামিদুল ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং ওই ব্যক্তিকে মারধর করছিলেন। তার বয়স আনুমানিক ৫০ বছর।

এছাড়া ওই সময় দায়িত্ব পালনে আসা পুলিশ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। পাটগ্রাম থানার একজন কর্মকর্তা এম শাহজাহান আলী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। তবে পুলিশের মামলায় আসামিদের সংখ্যা এখনও বলা হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার আবু ইউসুফ শহিদুন্নবী জুয়েল নামের ওই ব্যক্তিকে তুচ্ছ ঘটনায় একটি মসজিদের ভেতর থেকে বের করে এনে মারধর করার পর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হলেও সেখান থেকে উত্তেজিত জনতা বের করে এনে পিটিয়ে হত্যার পর তার মরদেহ পুড়িয়ে দেয়। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে চেষ্টা করেও তাদের থামাতে ব্যর্থ হন। ক্ষুব্ধ জনতা তাদেরও ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।

আরও সংবাদ

Close