আজকের সিলেট
ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব কাল : মৌলভীবাজারের মণিপুরী পাড়ায় সাজ সাজ রব
মৌলভীবাজারের মণিপুরী অধ্যুষিত গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় এখন রাস উৎসবের আমেজ। আগামীকাল সোমবার (৩০ নভেম্বর) রাসোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাসোৎসবকে ঘিরে মাধবপুর ও আদমপুরের মণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে সাদা কাগজের নকশার নিপুণ কারুকাজে। করা হয়েছে আলোকসজ্জাও। সেখানে মণিপুরী শিশু নৃত্যশিল্পীদের সুনিপুণ নৃত্যাভিনয় রাতভর মনমুগ্ধ করে রাখবে লাখো ভক্ত ও দর্শনার্থীদের।
এবার মাধবপুর জোড় মন্ডপে ১৭৮ তম রাস উৎসব। মাধবপুরের রাসমেলার আয়োজক হচ্ছে মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘ। মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া সম্প্রদায়। উৎসবস্থল মাধবপুরের শিববাজার উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণে হবে গোষ্ঠলীলা বা রাখাল নৃত্য। রাতে জোড় মন্ডপে রাসের ম‚ল প্রাণ মহারাসলীলা।
অন্যদিকে ১৯৮৬ সাল থেকে কমলগঞ্জের আদমপুরে মণিপুরী মৈতৈ স¤প্রদায় আয়োজন করছে পৃথক রাসমেলার। এবার ৩৮ তম উৎসব। এখানেও থাকবে যথারীতি রাখাল নৃত্য ও রাসলীলা। তবে মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরী মৈতৈ এরা আলাদা স্থানে আয়োজন করলেও উৎসবের অন্ত:স্রোত, রসের কথা, আনন্দ-প্রার্থণা সবই একই। উৎসবের ভেতরের কথা হচ্ছে বিশ্বশান্তি, স¤প্রীতি ও সত্যসুন্দর মানবপ্রেম।
রাস উৎসব আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, ‘মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্র প্রথম মণিপুরে শ্রীশ্রীমহারাসলীলা বা রাসমেলা প্রবর্তন করেছিলেন। ‘রাস’ শব্দটা এসেছে জগৎপতি কৃষ্ণের ১২ ধরনের রস থেকে। এই রাসের সঙ্গে মেলা যুক্ত হয়ে ‘রাসমেলা’ হয়েছে। তবে ১২টি রসের মধ্যে রাসলীলায় মূলত সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর এই তিনটি রসের উপস্থাপনাই হয়ে থাকে। উৎসবটা মণিপুরী সম্প্রদায়ের হলেও এটি এখন ধর্মীয় গণ্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত মণিপুরী সংস্কৃতির বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। উৎসবকে সফল করতে প্রায় মাস খানেক ধরে ছয়টি বাড়িতে রাসনৃত্য এবং রাখাল নৃত্যের প্রশিক্ষণ ও মহড়া পরিচালিত হয়।’