শীর্ষ খবর

সিগারেট টানছেন, আর গুনছেন টাকা : ঘুষ নেয়ার ভিডিওতে তোলপাড়

পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) দরকষাকষি করে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই হারুনুর রশীদের। ঘুষ গ্রহণের দৃশ্য ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গত বুধবার ভিডিও’র বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসার পরপরই পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে অভিযুক্তকে।

টাকা গুণে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার ভিডিওটি লকডাউন সময়ের বলে জানা গেছে। লকডাউনে দোকানপাট খুললেই এএসআই হারুনকে ঘুষ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। এএসআই হারুণ অবশ্য এ নিয়ে এখন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এদিকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। তাকে প্রত্যাহারের পর তার অপকর্মের বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, লকডাউনের সময় তাহেরপুর বাজারের একটি মোবাইল ফোনের দোকানে ঢুকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এএসআই হারুন। জলন্ত সিগারেট মুখে রেখে দোকানদারের সঙ্গে ঘুষ নিয়ে দরকষাকষি হয়।অতঃপর দুই হাজার টাকায় রফা হয়। পরে টাকা গুণে দেখে তিনি আরও এক হাজার টাকা দাবি করেন। পুরো টাকা নিয়েই একপর্যায়ে তিনি দোকান ত্যাগ করেন।

ফেসবুকে রফিকুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘আমার মতে পুলিশ প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর সময় হয়েছে। এই প্রশাসন যে এত খারাপের দিকে গেছে বলে শেষ করা যাবেনা।। দুর্নীতি, দুর্নীতি, আর দুর্নীতি। সরকারকে অনুরুধ করছি এই প্রশাসনের দৃষ্টি দেয়ার জন্য। এমন আর কত দিন চলবে। যাও মাঝে মাঝে ধরা হয়। তদবির করে আবার আগের মত হয়ে যাই। সরকারের উচিৎ এই দিকে আগে নজর দেয়া। না হয় সরকারের আশা আখাংকা সব ধুলোয় মিশে যাবে।। এই জায়গা যদি দুর্নীতি বন্ধ না হয়। তাহলে দুর্নীতির এই অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ কখনো মুক্ত হতে পারবেনা। পুলিশের দুর্নীতি যদি বন্ধ হয়। তাহলে পুলিশই দুর্নীতি করতে দিবেনা কাউকে। তাহলে কিছুটা দুর্নীতি বন্ধ হবে। তারা শপথ করার সময় দুর্নীতি করার জন্য শপথ করে। না দুর্নীতি না করার জন্য শপথ নেই। আল্লাহ্র কাছে বিচার দিলাম। জয় হোক মানবতা।’’

পারভেজ লিখেছেন, ‘‘সরকারের কাছে আকুল আবেদন। প্রতিটা সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারির বিরুদ্ধে।এমন আইন পাশ করা হোক। যাতে এরা ঘুষ উৎকোচ নিতে ভয় পায় বা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।এমন আইন করবেন যে ঘুষ দিবে তার দুই বছরের জেল। বিশ হাজার টাকা জরিমান। আর যে ঘুষ নিবে তাকে চাকরি থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার, পাঁচ বছরের জেল। সাথে বিশ লক্ষ্য টাকা জরিমানা এবং জাতীয় বেঈমান খেতাব দিতে হবে।..’’

মোজাম্মেল হক লিখেছেন, ‘‘চোখে পড়লে অপরাধী, রাতের অন্ধকারে যেগুলো হয় তারা নিষ্পাপ। এই ধারনা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
প্রসাশন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়া সময়ের দাবি।’’

ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ঘটনাটা যাই থাকুক, প্রাথমিক তদন্তে আমাদের মনে হয়েছে এএসআই হারুন কাজটা ঠিক করেননি। তাই তাকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তের জন্য একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। সেই প্রতিবেদনে যদি এএসআই হারুন অভিযুক্ত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও সংবাদ

Close