আজকের সিলেট
সিলেটে পরিবহণ ধর্মঘটে দুর্ভোগ চরমে : নামেনি নগর এক্সপ্রেসও
সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে । আজ বুধবার সকাল থেকে যানবাহন চলাচলের সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা। বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার যান চলাচল। রিকশা চলছে কেবল।
রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় অফিসগামী হাজারো মানুষের জন্য বিড়ম্বনাকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে দূর গন্তব্যের অফিসগামী যাঁরা নিয়মিত বাসে যাতায়াত করেন, বাস না পেয়ে রীতিমতো নাকাল হচ্ছেন তাঁরা।
বন্ধ পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে সিলেটে মঙ্গলবার সকাল থেকে তিন দিনের ধর্মঘট শুরু করেছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ। তাদের সাথে একাত্মতা জানিয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।
ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও মোড়ে মোড়ে পরিবহন শ্রমিকদের লাঠি হাতে রাস্তায় থাকতে দেখা গেছে। এতে করে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠাও লক্ষ্য করা গেছে।
জানা যায়, পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়া- এই পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরআগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বেলা)-এর দায়ের করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সবধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।
সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আন্দোলন করে আসছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। এবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। একাধিক বিক্ষোভ সমাবেশ করার পর মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা ৭২ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছেন তারা।
এদিকে, এ ধর্মঘটের ফলে সিলেট থেকে দুর পাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। ছেড়ে যায়নি আন্ত:জেলা বাসগুলোও। সব মিলিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সিলেটের মানুষ।
এই ভোগান্তি আরও কয়েকগুণ বেড়ে নগরে সিএনজি অটোরিকশা না চলাচল করায়। তবে মানুষের এই সংকটে আশার আলো হতে পারতো ‘নগর এক্সপ্রেস’ সার্ভিস। নগরীর গণপরিবহন সঙ্কট দূর করতে ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর ৪১টি বাস নিয়ে এ পরিবহন সেবা চালু করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এ সার্ভিস চালুর পর থেকে ভালো সাড়াও মেলে।
কিন্তু চলমান এ পরিবহণ ধর্মঘটের সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বাসগুলোও বন্ধ থাকায় সমালোচনার জড় বইছে। নগরবাসী বলছেন, পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনের সময় ‘নগর এক্সপ্রেস’ বন্ধ রাখা কোনো ভাবেই উচিত হয়নি। বরং নগরবাসীর এই সংকটের সময় ‘নগর এক্সপ্রেস’ চালু রেখে নগরবাসীর পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিলো।