আজকের সিলেট

নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জামিন চাইলেন রায়হান হত্যা মামলার আসামী পুলিশ সদস্য

পুলিশী নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যা মামলার আসামী পুলিশ সদস্য হারুনুর রশীদের জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হয়েছিল তার। শুনানী শেষে আদালতের বিচারক মো. আব্দুর রহিম না মঞ্জুর করেন জামিনের আবেদন।

এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর ফৌজদারি মোশন (৮৮৭/২০ইং) এর মাধ্যমে ওই পুলিশ সদস্যের জামিন আবেদন করা হয়েছিল। আজ জামিন আবেদন শুনানির জন্য ছিল ধার্য তারিখ । শুনানীকালে পুলিশ সদস্য হারুনকে আনা হয়নি আদালতে। এছাড়া ওই মামলার ধার্য তারিখ রয়েছে আগামী ২৬ জানুয়ারি। ওই দিন মামলায় গ্রেফতারকৃত সকল আসামীকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।

পুলিশ সদস্য হারুনের আইনজীবী আদালতে জামিন শুনানিকালে হারুনকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, রায়হান হত্যার ঘটনায় জড়িতও নয় সে। তার কোন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই এবং হারুন নিহত রায়হানকে কোন আঘাত করেননি। মামলার এফআইআর এ হারুনের নাম নেই। তাছাড়া কার আঘাতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে তাও উল্লেখ করা হয়নি। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা জড়িত করা হয়েছে হারুনকে।

রায়হানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, আদালতে পুলিশ কনস্টেবল হারুন জামিনের আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করেন আদালত। রায়হান হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো হারুন। জামিন শুনানীকালে জামিনের বিরোধীতা করেছি আমরা। এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল কয়েকজন আদালতে পূর্বে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আমাদের বক্তব্য আদালত শুনার পর না মঞ্জুর করেন জামিন।

এর আগে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় আসামীদের জামিনের বিষয়ে খবর পেয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হন রায়হানের মাসহ তার পরিবারের সদস্যরা।

হারুনের জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রায়হানের মা সালমা বেগম জানান, আদালত ন্যায় বিচার করেছেন জামিন না দিয়ে। আমি হারিয়েছি আমার ছেলেকে। আমি ছেলে হত্যার যথাযথ বিচার চাই। আমি আমার ছেলেকে হারিয়ে আজ পথে। কিন্তু পুলিশ কনস্টেবল হারুন গোপনে আদালতে জামিন নিতে চাচ্ছে। বিষয়টি আমি জানার পর পরই আদালতে ছুটে আসি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে।

গতকাল ১১ জানুয়ারি রায়হান হত্যার ৩ মাস পূর্ণ হয়েছে। নগরীর আখালিয়ার নেহারীপাড়ার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে গত বছরের ১১ অক্টোবর দিবাগত রাতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। রাত ৩টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে স্বাভাবিক অবস্থায় রায়হানকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসার পর সকাল ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে ফাঁড়ি থেকে বের করা হয় রায়হানকে। ৬টা ৪০ মিনিটে ওসমানী হাসপাতালে নেয়া পর ৭টা ৫০ মিনিটে মারা যায় রায়হান। ওইদিনই ময়না তদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছিল তার লাশ।

আরও সংবাদ

Close