আজকের সিলেট

গণমুখী রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র জিল্লুল হক

মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুল হক গণমুখী রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় দুর্নীতির কলঙ্ক যাকে স্পর্শ করেনি।

১৯৯২ সালে জনগণের মায়ার জালে আবদ্ধ হয়ে জিল্লুল হক পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।সে সময় তিনি ইতালির নাগরিক ছিলেন কিন্তু জনগণের সুখ-দুঃখের কথা ভেবে একদিনের জন্যও পা বাড়াননি ইতালির দিকে।

বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিখোঁজ এম. ইলিয়াস আলীর বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা জিল্লুল হক পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা। দাপটের সাথে রাজনীতি ও চেয়ারম্যানি করলেও নিজের কিংবা পরিবারের জন্য কিছুই করেননি।ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে করেননি বাড়ি, গাড়ি–গড়েননি টাকার পাহাড়। ব্যাংকে ব্যাংকে গড়ে তুলেননি নিজের নামে বিশাল বিশাল ব্যালেন্স। আজও মানসম্পন্ন একটি বাড়ি নির্মাণ করেননি। বা করতে চান নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সাবেক মন্ত্রী বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর স্নেহ ছায়ায় রাজনীতির দীর্ঘ পথ হাঁটা জিল্লুল হক এখনো পথ চলছেন নিজস্ব ছন্দে। তার আশীর্বাদ ও ছত্রছায়ায় অনেকেই বিএনপির ও এলাকার বড় বড় নেতা হয়েছেন।

এক সময় তার বাড়ি ছিল এই অঞ্চলের মানুষের পদভারে মুখরিত। সমগ্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা সব সময় এই নেতার পিছনে ছুটেছেন। সারা ইউনিয়নজুড়ে ব্যাপক উন্নয়ন করলেও নিজের বাড়ির রাস্তাটি তিনি করেননি। আজও বর্ষা মৌসুমে চলা-ফেরার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বাড়ির লোকজনদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

ওসমানীনগরের সম্ভ্রান্ত ও বনেদি বিত্তশালী পরিবারের সন্তান জিল্লুল হক রাজনীতিতে এসে কখনও দুর্নীতির কলঙ্ক গায়ে মাখেননি। দিনে দিনে হয়েছেন রিক্ত-নিঃস্ব। বাড়ির দরজা মানুষের জন্য খোলা রেখেছেন দিবা-রাত্রি। মানুষকে আপ্যায়িত করে কতটা আনন্দ পাওয়া যায় জিল্লুল হকের সান্নিধ্যে না গেলে তা জানা যায় না। গলমুকাপনের বাড়ি খানি যেনো ছিলো সরাইখানা। থাকা-খাওয়ার এলাহী আয়োজন ছিলো এক সময় তার বাড়িতে। রাজনীতি ও চেয়ারম্যানি করতে গিয়ে পৈতৃক ভিটে মাটি বিক্রি করতে করতে সর্বশেষ তার কাঁধে রয়েছে বিশাল অঙ্কের ঋণের বোঝা।

জিল্লুল হক রাজনীতিতে এসে মানুষের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা কুড়ালেও বিত্ত-বৈভব হারিয়েছেন। তার কাছ থেকে অচেনা মানুষেরাও খালি হাতে ফেরেনি। জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত মানুষের মাঝে থেকে উপভোগ করেন। তার গোটা জীবন যেনো খোলা বইয়ের মতো। জিল্লুল হক দেহের চেয়ে বড় হৃদয় দিয়ে মানুষকে ভালোবেসে কল্যাণের রাজনীতিতে দীর্ঘ পথ হাঁটা এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

একজন সালিশী ব্যক্তি হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে তার। তিনি একজন নামকরা কাবাডি খেলোয়ার ও ফুটবলার ছিলেন।জিল্লুল হক বিভিন্ন সময় পাকিস্তান, গ্রীস, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইতালি ভ্রমণ করেছেন। সবসময় গণমানুষের সাথে এই রাজনীতিবিদের সম্পর্ক ছিলো। পাঞ্জাবি আর লুঙ্গিতে সবসময় একজন সাদামাটা ব্যক্তির চলাফেরায় বহন করে একজন নিরহংকার খোলা মনের স্বচ্ছ ইমেজের জনতার নেতার ব্যক্তিত্ব। ৭০’র পেরোনো এই সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ রাজনীতি করে অর্থ-বিত্ত না গড়লেও খুইয়েছেন বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি। রোগে-শোকে অনেকটা বিপর্যস্ত তিনি। জিল্লুল হক হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছেন। পত্রিকা পড়ে আর পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প গুজব করে অবসর সময় কাটে একসময়ের তুখোড় এই রাজনীতিবিদের।

আরও সংবাদ

Close