শীর্ষ খবর
করোনার ভ্যাকসিন সংকটে সিলেট!
সিলেট বিভাগের চার জেলায় কমে এসেছে ভ্যাকসিনের মজুদ। সেকারণে করোনা ভ্যাকসিন সংকটে পড়তে যাচ্ছে সিলেট!, এতে হাতে গোনা কয়েকদিন যাবে মাত্র ভ্যাকসিনের অবশিষ্ট মজুতে। নতুন করে ভ্যাকসিনের চালান না আসলে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণে বঞ্চিত হবেন সিলেটের লক্ষাধিক লোক। এছাড়া প্রথম ডোজও ঝুটবে না অনেকের ভাগ্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের তথ্যানুসারে, প্রথম চালানে ৪ লাখ ৪৪ হাজার ডোজ করোনা টিকা আসে সিলেট বিভাগে। এরমধ্যে সিলেট প্রথম ধাপে আসে দুই লাখ ২৮ হাজার ভ্যাকসিন, পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপে ভ্যাকসিন আসে আরও ৭২ হাজার। এগুলো শেষ হওয়ার আগে পরবর্তী টিকার চালান পৌছার কথা ছিল। এমন নিশ্চয়তায়, ভ্যাকসিনের সংকট পড়বে না বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান ও সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মন্ডল। কিন্তু ভ্যাকসিন না আসায় পূর্বের বক্তব্যের ছন্দপতন ঘটছে, এখন আশংকা দেখা দিয়েছে ভ্যাকসিন সংকটের। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন করেছেন ৯ হাজার ৮৭ জন। এরমধ্যে ৫ হাজার ৭০৩ জন পুরুষ ও ৩ হাজার ৩৮৪ জন নারী। এদিন প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৭৬০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৫৪৮ জন এবং নারী ২১২ জন।
সূত্র মতে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকা নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয় সিলেটে। এ পর্যন্ত বিভাগে প্রথম ডোজের জন্য ৩ লাখ ৭২ হাজার ৮১৮ জন রেজিস্ট্রেশন করে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫১ জন। এ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ২২৩ জন। বিপরীতে ভায়াল মজুদ আছে ৭ হাজার ৩৮৫টি। প্রতিটি ভায়ালে ১০টি করে ডোজ থাকে। সে হিসেবে মঙ্গলবার পর্যন্ত টিকা মজুতের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৮৫০ ডোজ. এমন তথ্যে সংশ্লিষ্টদের।
অপরদিকে, এখনো দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার বাকি আছেন এক লাখ ৮৫ হাজার ৪২৮ জন। নিবন্ধিতদের মধ্যে প্রথম ডোজ গ্রহনে এখনো বাকি রয়েছেন ৭৬ হাজার ১৬৭ জন। সে হিসেবে বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ সবিমিলিয়ে এখনো এক লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৫ জন টিকা পাবেন। বিপরীতে ভ্যাকসিন আছে মাত্র ৭৩ হাজার ৮৫০ ডোজ।
সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, জেলায় মঙ্গলবার ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন আরও ৩ হাজার ২৭০ জন। প্রথম ডোজ নিয়েছেন আরও ৩৮০ জন। ভ্যাকসিনের জন্য ১ লাখ ৫১ হাজার ১৮১ জন টিকার জন্য নিবন্ধন করে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার ৮২ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৯৬ জন। বিপরীতে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২ হাজার ১৫৪টি মজুদ রয়েছে ভায়াল। এখনও ২১ হাজার ৫৪০ ডোজ নিতে পারবেন। যদি নতুন করে টিকা না আসে, অবশ্যই দেখা দিবে সংকট। তবে কেউ প্রথম ডোজ নিয়ে দ্বিতীয় ডোজ না পেলেও কোনো সমস্যা হবে না শারীরিক।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, সিসিক এলাকায় ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫৯ হাজার জন। এরমধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ২৩ হাজার জন। এখনো মজুদ আছে ডোজ ১৬ হাজার। আরও ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়েছে ২৫ হাজার ডোজ চেয়ে।
সিলেট স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বিভাগের মধ্যে সিলেট ছাড়াও বিভাগের মধ্যে সুনামগঞ্জে ৭১ হাজার ১৯২ জন রেজিস্ট্রেশন করে ৬১ হাজার ২৬২ জনে প্রথম ডোজ এবং ২০ হাজার ৫৫ জনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ। এ জেলায় মজুদ আছে ২ হাজার ১৮০টি ভায়াল তথা ২১ হাজার ৮০০ ভ্যাকসিন পাবেন।
মৌলভীবাজারে ৭৮ হাজার ২১৪ জন নিবন্ধন করে ৬৬ হাজার ২২৭ জন প্রথম ডোজ এবং ৩১ হাজার ৪৬৪ জন গ্রহন করেছেন দ্বিতীয় ডোজ। জেলায় ভায়াল মজুদ আছে এক হাজার ৩৪৬টি। সে হিসাবে ডোজ নিতে পাবেন ১৩ হাজার ৪৬০ জন।
এছাড়া হবিগঞ্জে ৭২ হাজার ২৩১ জন নিবন্ধন করে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৭ হাজার ৮০ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২৩ হাজার ২০৮ জন। জেলায় ভ্যাকসিন মজুদ আছে এক হাজার ৭০৫টি ভায়াল। সে হিসাবে ডোজ নিতে পারবেন আরও ১৭ হাজার ৫০ জন।
সূত্র: ইনকিলাব