আজকের সিলেট
সেনা সদস্য পরিচয়ে প্রেম : সিলেটে মেয়ের বাড়িতে আটক প্রতারক
কখনো বলেন তার বাবা সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা, কখনো নিজেই সেনা সদস্য। কখনো বা নিজেকে গার্মেন্টস মালিকের একমাত্র পুত্র পরিচয় দিয়ে পরিচিত হন সিলেটের এক মেয়ের সাথে। তারপর সিলেটে এসে মেয়ের বাবার কাছে দেন বিয়ের প্রস্তাব। কথা বার্তায় সন্দেহ হলে তারা যাচাই বাছাই করতে গিয়ে বুঝতে পারেন সে এক প্রতারক। পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে নিয়ে আসে।
ঘটনাটি ঘটেছে আজ শুক্রবার সিলেটের ধোপাগুল এলাকায়। দুপুরে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে মেয়ের বাড়ির পাশে ঘুরঘুর করছিল সে। পরে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত ওমর ফারুক তালুকদার (২৩) শেরপুর জেলার শেরপুর সদর থানার হেরুয়া বাজারীপাড়া (ডালিমুল বাজার) গ্রামের লুৎফর রহমান তালুকদারের পুত্র। বর্তমানে সে ঢাকার আশুলিয়া থানার শ্রীপুর নতুন নগর এলাকার ২০১ নং বাসায় বসবাস করে আসছে।
পুলিশ জানায়, ফারুক তালুকদার নিজেকে সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানাধীন ধোপাগুলস্থ একটি বাড়ীতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। কিন্তু মেয়ের বাবা তাকে রাতের বেলা বাড়ীতে প্রবেশ করতে না দিয়ে দিনের বেলা আসার জন্য বলেন। গত কয়েক মাস আগে ফেইসবুকের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির ছোট মেয়ের সাথে ফারুক তালুকদারের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে সে নিজেকে সাবেক সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার ছেলে, আবার কখনো গামেন্টস ব্যবসায়ীর একমাত্র ছেলে, আবার কখনো সে নিজেই সেনাবাহিনীতে কাজ করে মর্মে পরিচয় দিয়ে এসেছে।
পরিচয়ের সূত্র ধরে গত ১৭ মে রাতে মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে সে। এসময় মেয়ের বাবা তাকে তার পিতা-মাতাকে নিয়ে এসে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য বলেন।
পরে আজ শুক্রবার সকালে ফারুক তালুকার একা ফের ওই মেয়ের বাড়িতে আসে। এসময় বাড়ীর লোকজন তাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়া কথা বলার ফাঁকে সে যে সেনাবাহিনীতে চাকুরী করে এই সংক্রান্ত কোন প্রমাণপত্র তার নিকট আছে কিনা জানতে চাইলে সে বাড়ী হতে বের হয়ে চলে যায়। দুপুরে সে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে বাড়ীর আশপাশে ঘুরাঘুরি শুরু করে।
পরে ওই বাড়ির লোকজন তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসেন এবং তার পিতা-মাতার ফোন নাম্বার জানতে চান। কিন্তু সে ফোন নাম্বার দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। অবশেষে সে একটি ফোন নাম্বার দিলে তাতে ফোন দিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় সে কখনো সেনাবাহিনী কিংবা সরকারি কোন চাকুরী করে নাই। প্রতারণার উদ্দেশ্যে সরকারি কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধারণ করে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিধান করেছে । মূলতঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মেয়ের সাথে বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক স্থাপন করে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা বলে ভূয়া পরিচয় দিয়ে বিবাহ করার চেষ্টা করে।
পরে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন তাকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।