খেলাশীর্ষ খবর

সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত জয় পেল বাংলাদেশ। মাত্র ১৩২ রানের টার্গেট ছিল। সামনে অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষ। টি-টোয়েন্টিতে এমন পুঁজি নিয়ে যে কোনো দলের সঙ্গেই তো লড়াই করা কঠিন!

কিন্তু সেই কঠিন কাজটিই করে দেখাল বাংলার টাইগাররা। অসিদৈত্য বধ হলো ইতিহাস গড়ে। টেস্ট, ওয়ানডেতে জয় পেলেও টি-টোয়েন্টিতে এতদিন অধরাই ছিল অস্ট্রেলিয়া। অবশেষে স্বপ্নপূরণ হলো। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে উৎসবের রঙে রাঙালেন মাহমুদউল্লাহ-সাকিব-নাসুমরা।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। ছোট্ট পুঁজি নিয়েও মিরপুরে তারা অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিয়েছে ২৩ রানে।

বাংলাদেশের দেওয়া ১৩২ রানে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের প্রথম বলেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন মেহেদী হাসান। অ্যালেয ক্যারেকে সরাসরি বোল্ড করে শূন্য রানেই সাজঘরে ফেরান মেহেদী। এরপর ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি আরেক ওপেনার জস ফিলিপেও। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নাসুম আহমেদের বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

দলের তৃতীয় ও নিজের প্রথম ওভারে বল করতে এসে সাফল্য এনে দেন সাকিব আল হাসানও। মোয়েসেস হেনরিকসকে সাজঘরে ফেরান তিনি।

চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মিচেল মার্শ। এ জুটিতে স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৩৮ রান। তবে দলকে আবারও সাফল্য এনে দেন নাসুম। ওয়েডকে সাজঘরে ফেরান তিনি। আউট হওয়ার আগে ১৩ রান করেন তিনি।

এরপর অ্যাস্টন আগারকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মার্শ। তবে আবারও ভয়ঙ্কর হওয়ার আগে এ জুটি ভাঙেন নাসুম। আগার ফিরে যান ৭ রান করে। ৭১ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসা অস্ট্রেলিয়া আবার চাপে পড়ে দলীয় ৮৪ রানে। ৪৫ রান করা মার্শকে আউট করে নিজের চতুর্থ শিকারে পরিণত করেন নাসুম। এরপর ঠিক ১০০ রানে অ্যাস্টন টার্নারকে আউট করে নিজের প্রথম সাফল্য পান মোস্তাফিজ।

এরপর জোড়া আঘাত হানেন শরিফুল। ১৯তম ওভারে অ্যান্ড্রু টাই ও অ্যাডাম জাম্পাকে আউট করেন তিনি। শেষ ওভারে অজি শিবিরে শেষ পেরেক ঠুকেন মোস্তাফিজ।

ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন নাসুম। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া মোস্তাফিজ ও শরিফুল নেন দুটি করে উইকেট। সাকিব ও মেহেদীর শিকার সমান এক উইকেট।

এর আগে, টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকান ওপেনার নাঈম শেখ। লেগ স্টাম্পের ওপর করা মিচেল স্টার্কের বলটাকে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে যেন মোহাম্মদ নাঈম শুরু থেকেই আক্রমণের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে সে ধারাবাহিকতা বাংলাদেশ এরপর ধরে রাখতে পারেনি। পাওয়ার প্লেতে খেলেছে একের পর এক ডট, যা একটু করে চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছিল স্বাগতিকদের ওপর।

মন্থর ব্যাটিংয়ে সেই যে চাপ ভর করল, সেটা তাড়ানো গেল না ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। শেষমেশ বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় সাত উইকেট হারিয়ে ১৩১ রানে। ফলে অজিদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩২ রানের।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন সাকিব। তার ৩৩ বলের ইনিংসে রয়েছে ৩টি চারের মার। এছাড়া নাঈম করেন ২৮ বলে ৩০ রান। ২০ বলে ২০ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। শেষদিকে আফিফ হোসেন ১৭ বলে ২৩ রান করলে ১৩১ রানের মাঝারি সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

অস্ট্রেলিয়ায়র পক্ষে ৪ ওভারে ২৪ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন হ্যাজেলউড। এছাড়া স্টার্ক নেন ২ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ : ১৩১/৭ (২০ ওভার) (সাকিব ৩৬, নাঈম ৩০, আফিফ ২৩; হ্যাজেলউড ৩/২৪, স্টার্ক ২/৩৩)

অস্ট্রেলিয়া : ১০৮/১০ (২০ ওভার) ( মার্শ ৪৫, স্টার্ক ১৪, ওয়েড ১৩; নাসুম ১৯/৪, মোস্তাফিজ ২/১৬, শরিফুল ২/১৯)

আরও সংবাদ

Close