শীর্ষ খবর
ক্যাপ্টেন মাজেদের ফাঁসির কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু : আইনমন্ত্রী
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় আসামি ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা জানান।
গতকাল সোমবার (৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদকে গ্রেফতার করে।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে এই আসামিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (ক্যাপ্টেন মাজেদ) বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্র ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। ক্যাপ্টেন আবদুল মজিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়ার পর বিচারিক আদালত এবং আপিল বিভাগ তাকে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডায়িত করেন।’
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন মাজেদ। তখন তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপুর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর মাজেদ কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খানসহ আরো কয়েকজনের সঙ্গে রেডিও স্টেশন নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্বে ছিলেন। অন্য খুনিদের সঙ্গে দেশত্যাগের আগ পর্যন্ত বঙ্গভবনে ‘বিভিন্ন দায়িত্ব’ ছিল তার।
পরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যাংকক হয়ে লিবিয়ায় চলে যান মাজেদ। তখনকার সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের নির্দেশেই তারা সে সময় নিরাপদে দেশ ছেড়ে যান বলে উল্লেখ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
মাজেদরা লিবিয়ায় ছিলেন তিন মাস। এরপর ‘পুরস্কার হিসেবে’ তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মাজেদকে পাঠানো হয় সেনেগাল দূতাবাসে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৮০ সালের ২৬ মার্চ আবদুল মাজেদকে বিআইডব্লিউটিসিতে চাকরি দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে উপসচিবের মর্যাদায় তিনি বিআইডব্লিউটিসিতে যোগ দেন।
পরে তাকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে তখনকার যুব উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ‘ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’ শাখার পরিচালক করা হয়। এরপর দেওয়া হয় তখনকার জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের পরিচালকের দায়িত্ব।
সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে। মামলার পর বিচারও শুরু হয়। সে সময় আটক হওয়ার ভয়ে আত্মগোপনে যান আবদুল মাজেদ।
এরপর ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় গেলে ফের শ্লথ হয়ে যায় মামলার গতি। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরলে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়।