শীর্ষ খবর
সিলেটে বসছে ‘লাইটার অ্যারেস্টার’ : বজ্রপাতের ৪০ মিনিট আগে জানাবে অ্যাপ
দেশের মধ্যে সিলেট অঞ্চল বজ্রপাতের জন্য ঝুঁ’কিপূর্ণ। বিভাগের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। মা’র্চ থেকে মে মাস অবধি এ অঞ্চলে বজ্রপাত বেশি হয়। এতে প্রতি বছর মারা যান বেশকিছু মানুষ।
বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে তালগাছ লাগানোর পাশাপাশি এবার বসছে ‘লাইটার অ্যারেস্টার’ সংবলিত বজ্রপাত-নিরোধক কংক্রিটের ছাউনি (শেল্টার)। সিলেট বিভাগের চারটি জেলাসহ বজ্রপাতপ্রবণ ২৩টি জে’লায় এসব ছাউনি নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পে ব্যয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাজশাহীসহ দেশের ২৩টি জেলাকে বজ্রপাতপ্রবণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই জেলাগুলোতে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এক হাজারটি ছাউনি তৈরি করা হবে, যার ওপরে বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড ব্যবহার করা হবে। প্রজেক্ট তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর কাজ শুরু করা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বজ্রপাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে একটি প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। বজ্রপাতপ্রবণ জেলাগুলোতে লাইটিং ডিটেক্টর সেন্টার বসানো হবে। ৪০ মিনিট আগে সিগন্যাল দেবে। সিগন্যালটি অ্যাপের মাধ্যমে ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে চলে যাবে। আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হবে। ফাঁকা স্থানে এক কিলোমিটর ব্যবধানে আশ্রয়কেন্দ্র করা হবে, যাতে সিগন্যাল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ১০ বছরে বজ্রপাতে দেশে কমবেশি আড়াই হাজার মানুষের মৃ’ত্যু হয়েছে। বজ্রপাতে ২০১১ সালে মা’রা গেছেন ১৭৯ জন, ২০১২ সালে ২০১ জন, ২০১৩ সালে ১৮৫ জন, ২০১৪ সালে ১৭০ জন, ২০১৫ সালে ১৬০ জন, ২০১৬ সালে ২০৫ জন, ২০১৭ সালে ৩০১ জন, ২০১৮ সালে ৩৫৯ জন, ২০১৯ সালে ১৯৮ জন, ২০২০ সালে ২১১ জন এবং ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত মা’রা গেছেন ১০৯ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে চলতি বছরের সাড়ে আট মাসে মা’রা গেছেন দুই শর বেশি মানুষ।
গবেষকদের মতে, নাসার তথ্য অনুযায়ী বজ্রপাতের অন্যতম হটস্পট বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট কর্মক’র্তারা জানান, হাওরাঞ্চলের পাশাপাশি যেসব এলাকায় সবচেয়ে বেশি মানুষ বজ্রপাতে মা’রা গেছেন, সেসব এলাকায় ছাউনি নির্মাণে প্রাধান্য দেওয়া হবে।বিশেষজ্ঞদের মতে, হাওরাঞ্চল নেত্রকোনা, কি’শোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটে মা’র্চ-এপ্রিল-মে মাসে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়। মৌসুমে বজ্রপাত বেশি হয় সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, বরিশাল এবং উত্তরবঙ্গের রংপুর, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামে। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কক্সবাজারে বজ্রপাত বেশি হয়। সাতক্ষীরা, খুলনা, পটুয়াখালী এসব অঞ্চলে শীতকালে হয় বজ্রপাত।