শীর্ষ খবর

উত্তাপ বিয়ানীবাজারে : নভেম্বরের ইউপি নির্বাচনে নৌকা পাবে কারা?

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ তফশিল ঘোষণা হয়নি বিয়ানীবাজার উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের। তবুও এখানকার ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা বসে নেই। নিজেদের নির্বাচনী মাঠ ঘোচাতে ব্যস্ত রয়েছেন কৌশলী প্রচারণায়। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী এসব তৎপরতা জানিয়ে দিচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আসন্ন। আগামী নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বিয়ানীবাজারের ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্টিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিয়ানীবাজার উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে তোড়জোড় চালাচ্ছেন প্রায় অর্ধ শতাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী। তাদের ধারণা, দলের মনোনয়ন পেলেই জয় নিশ্চিত। প্রার্থীদের এমন মনোভাবের কারণে এবার আওয়ামী লীগের কয়েকটি ইউনিয়ন হাতছাড়া হওয়ার আশংকা রয়েছে। অনেক প্রার্থী নৌকা পেতে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নির্ধারনে নিয়ে উপজেলার অন্তত: ৪টি ইউনিয়নে দায়িত্বশীলদের বেশ বেগ পেতে হবে।

সূত্র জানায়, দলের শক্ত অবস্থান কিংবা দূর্গ বলে খ্যাত এমন কয়েকটি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় নেতাকর্মীরা বিভক্ত-যা নির্বাচনে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। দলের পরীক্ষিতরা ছাড়াও অপেক্ষাকৃত তরুণরা চেষ্টা-তদবির করে মনোনয়ন বাগিয়ে নিতেই বেশি মনযোগী। আর এ কারণে মাঠে শক্ত অবস্থান না থাকলেও তারা দলের কেন্দ্র ও জেলার হাই কমান্ডের সুনজরে পড়তে নানা কৌশল অব্যাহত রেখেছেন।

জানা গেছে, ভোটের মাঠের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরী করতে গত কয়েকবছর থেকে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন এখানকার অর্ধশত নেতাকর্মী। এরা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিশ্বস্থতা অর্জন করতে চেষ্টা করছেন। সকালে উপজেলা সভাপতির ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসলেও বিকালে ফের সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়ে গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছেন।

এখানকার আলীনগর ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন চান সিলেট জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতি আহবাবুর রহমান খান শিশু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম জায়গীরদার।

চারখাই: বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি হোসেন মুরাদ চৌধুরী।

শেওলা: বর্তমান চেয়ারম্যান জহুর উদ্দিন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ হোসেন খান।

দুবাগ: বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন (গতবারের বিদ্রোহী), ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক তাওফিক মাহমুদ চৌধুরী।

কুড়ারবাজার: সাবেক ফুটবলার তুতিউর রহমান তোতা (গতবারের বিদ্রোহী) ও আওয়ামীলীগ নেতা আলী যাকের সিদ্দিকী, আওয়ামীলীগ নেতা ও সাংবাদিক রেজাউল হক ।

মাথিউরা: বর্তমান চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন, শহীদ পরিবারের সন্তান আলমগীর হোসেন রুনু ও আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ আমান উদ্দিন।

তিলপাড়া: সাবেক চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা ইসলাম উদ্দিন (গতবারের বিদ্রোহী) এবং বিবেকানন্দ দাস বিবেক।

মোল্লাপুর: উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার এম এ কাদির (গতবারের বিদ্রোহী), যুক্তরাজ্য প্রবাসী শামীম আহমদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য দেলোয়ার হোসেন।

মুড়িয়া: উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ তারেক, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাব্বির উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা শফিউর রহমান এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য কাওছার আহমদ।

লাউতা: বর্তমান চেয়ারম্যান গৌছ উদ্দিন (গতবারের বিদ্রোহী), ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমদ, প্রেসক্লাব সভাপতি সজীব ভট্রাচার্য, আওয়ামীলীগ নেতা ও সাংবাদিক ইকবাল হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা পি এম পাল ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য লুৎফুর রহমান ফয়সল।

তারা ছাড়াও আরো কয়েকজন বিভিন্ন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে চান। এজন্য এলাকাভেদে প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন তারা।

একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলার ৩-৪টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে কেউ আগ্রহী নয়। কারণ এসব ইউনিয়নে কৌশলগত কারণে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে জেতার সম্ভাবনা কম। এরপরও একটিবার নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার খায়েশ পূরণ করতে মরিয়া উপজেলার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।

আরও সংবাদ

Close