সারা বাংলা
স্মার্টকার্ডের ভেল্কি : পুত্রের চেয়ে পিতা ৪ আর মা ১ বছরের বড়!
৫৭ বছর বয়সী ছেলের বাবার বয়স ৬১ বছর। আবার মায়ের বয়স ৫৮ বছর। বয়সের এমন আজব পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বালাইট পূর্বপাড়ার বাসিন্দা মোছলিম উদ্দীন, তার স্ত্রী ছুরতন বেগম ও তাদের বড় ছেলে মো. সোবহানের স্মার্ট কার্ডে।
মোছলিম উদ্দিন ভিক্ষাবৃত্তি করেন। স্ত্রীকে নিয়ে কালাই পৌরশহরের কলেজপাড়া মহল্লায় একটি বাড়িতে থাকেন তিনি। তাদের পাশের বাড়িতে বড় ছেলে সোবহান থাকেন।
স্মার্ট কার্ডে মোছলিমের জন্ম তারিখ ২৮ অক্টোবর ১৯৫৯, ছুরতনের ২৪ এপ্রিল ১৯৬২ লেখা। তাদের বড় ছেলে সোবহানের স্মার্ট কার্ডে জন্ম তারিখ লেখা ১ জুন ১৯৬৩। অর্থাৎ ছেলের চেয়ে মা ১০ মাসের বড়, বাবার সঙ্গে বয়সের পার্থক্য মাত্র চার বছর। এ ভুল সংশোধন করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন তারা। নানা কাগজপত্র জমা দেয়ার বেড়াজালে বয়সটাই সংশোধন হয়নি। এ কারণে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
মোছলিম উদ্দীনের বলেন, হামার আসল বয়স ৭৫ বছরের বেশি। সরকার মোক কার্ড করে দিচে সেটি মোর বয়স কমে দিচে। কার্ডত বয়স কম থাকার জন্য মুই বয়স্কভাতার কার্ড পাইনি। আবার কার্ডত হামার বেটার বয়স বেশি দিচে।
ছুরতন বেগম বলেন, মুই চোখে ঠিকমতো দেখি না। ভাতার কার্ডত জন্নি মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে গেছিনু। কার্ড দেখে বয়স হয়নি বলে হামাক ভাতার কার্ড করে দ্যাইনি। মোরা বয়স ঠিক করার জন্নি অফিসত গেছিনু, মোরকে বিয়্যার কাবিন চাওছে। একন মোরা বিয়্যার কাবিন কুতি পামু?
সোবহান বলেন, স্মার্টকার্ডে বাবা-মায়ের সঙ্গে আমার বয়সের পার্থক্য দেখে আমি বিস্মিত।
প্রতিবেশী আবুল কালাম বলেন, মা-বাবা ও ছেলের বয়সের এমন অদ্ভুত পার্থক্য দেখে অবাক হয়েছি। মোছলিম উদ্দীন খুবই গরিব মানুষ। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান। স্মার্টকার্ডে বয়স ভুল থাকায় সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, কারো জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স ভুল থাকলে বয়স সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাকে তার সঠিক বয়স প্রমাণে জন্য বিয়ের কাবিননামাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এছাড়া বয়স সংশোধন হবে না।
সৌজন্যে: আমারসংবাদ