শীর্ষ খবর
অনিশ্চয়তা কাটছে ১৫ লাখ মানুষের : দ্বিতীয় ডোজ দেবে আমেরিকা
ভারত টিকা দেয়া বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন ১৫ লাখ মানুষ। দেশে করোনাভাইরাসের টিকার যে পরিমাণ মজুত আছে তা এ সপ্তাহের মধ্যে ফুরিয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন এমন ১৫ লাখ গ্রহীতাকে নতুন করে সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকা না আসা পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে চরম অনিশ্চয়তার মাঝে আছেন এই ১৫ লাখ মানুষ।
করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববার স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘টিকা সংকটের কারণে প্রথম ডোজ নেয়া ১৫ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। টিকা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। আমরা ধৈর্য ধরব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করব। ৩০ মিনিট পরপর সাবান-পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করব।’
দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু থেকেই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভরশীল। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা আনতে গত বছরের ৫ নভেম্বর ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে ঢাকা। চুক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীও।
চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় ধাপে দেশে ৩ কোটি ডোজ টিকা পৌঁছানোর কথা থাকলেও সিরাম দিতে পারছে না। দুই ধাপে ৭০ লাখ ডোজ টিকা দিতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাকি টিকা পাওয়া নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সিরাম থেকে ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালানটি আসে গত জানুয়ারিতে। ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় চালানে টিকা আসে ২০ লাখ ডোজ। তবে কেনা টিকার বাইরে ভারত সরকার তিন ধাপে বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩৩ লাখ ডোজ। সব মিলিয়ে দেশে টিকার মজুত দাঁড়ায় ১ কোটি ৩ লাখ ডোজ। এর মধ্যে ৭০ লাখ ডোজ টিকা মজুত নিয়ে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় করোনা প্রতিরোধী গণটিকা কার্যক্রম। শনিবার পর্যন্ত টিকা দেয়া হয়েছে ৯৭ লাখ ৯২ হাজার ১৩০ ডোজ। সেই অনুযায়ী এখন মাত্র ৪ লাখ ৭ হাজার ৮৭০ ডোজ ভ্যাকসিন অবশিষ্ট আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তার জানায়, এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩৯ লাখ ৭২ হাজার ২১৮ জন। অর্থাৎ দুই ডোজ মিলিয়ে ৯৭ লাখ ৯২ হাজার ১৩০ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, আমেরিকা বাংলাদেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন দিতে সম্মত হয়েছে। আমেরিকায় বাইডেন প্রশাসন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন দেবার যে ঘোষণা দিয়েছেন, সিএনএন টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র মন্ত্রী মি: মোমেন তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য এটা খুবই সুখবর, কারণ বাংলাদেশ ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা কেনার জন্য চুক্তি সম্পাদন করেছিল। কিন্তু সিরাম এ পর্যন্ত মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে সরবরাহ করেছে এবং উপহার হিসাবে দিয়েছে ৩২লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন।
মি. মোমেন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাংলাদেশে যেসব মানুষ এই টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, টিকার অভাবে তাদের একটা বড় অংশ দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারছেন না।