শীর্ষ খবর

সিলেটে বৈরি আবহাওয়া : বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ

রবিউস সানী: রাতের তুলনায় দিনে প্রচণ্ড গরম। গরমে জনজীবন হাঁসফাঁস। গত কয়েক দিনের টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ সিলেটের জনজীবন। গরমের তীব্রতায় ছোটবড় সবার অবস্থা নাজুক। বাসা থেকে বের হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই রোদের খরতাপে অসহনীয় অবস্থায় পড়ছেন তাঁরা। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। এমন অবস্থায় সিলেটে হঠাৎ বেড়েছে জ্বরের প্রকোপ। বিশেষ করে শিশুদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সাধারণত আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারনে বাংলাদেশে এ সময়টাতে জ্বরের প্রকোপ এমনিতেই বৃদ্ধি পায়। বিষয়টি তেমন ভয়ের কিছু না হলেও এবারের জ্বর নিয়ে চিন্তা অন্যবারের চাইতে বেশি। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে- ভাইরাস জ্বর ৪-৫ দিনে সেরে গেলেও এবারের জ্বরে ১০-১২ দিন ভুগতে হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

সিলেটের আবহাওয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে পরিবর্তন লক্ষণীয়। দিন থেকে রাত পর্যন্ত থাকছে প্রচন্ড গরম। আসকাল থেকে রাত পর্যন্ত তীব্র গরমের কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। গরমের কারণে কোমল পানীয় পানে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। তবে মধ্য রাতে কিছুটা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়ার এই বৈপরীত্যে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ। তবে আক্রান্তদের বেশিরভাগই শিশু ও কিশোর।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাল ফ্লুর জন্য জ্বর-সর্দির প্রকোপ বেড়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরাম’র্শ নেওয়া উচিত। এই জ্বর-সর্দি-কাশির তীব্রতা থাকছে তিন থেকে সাতদিন। এক্ষেত্রে বিচলিত হওয়া যাবে না। জ্বর কিংবা ঠান্ডা, গলা খুসখুস মানেই করোনা নয়। ভাইরাল ফ্লু এর জন্য অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই জ্বর হলেই আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরাম’র্শ নিতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হলে তাকে বিদ্যালয়ে দেওয়া উচিত হবে না।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. শুক দেব পাল বলেন, ভাইরাল ফ্লু এর জন্যই জ্বর-সর্দির প্রকোপ বাড়ছে। শি’শু ও বাচ্চারাই আ’ক্রা’ন্ত হচ্ছেন বেশি। বড়দের মধ্যে এ প্রকোপ তুলনামূলক কম।

তিনি আরও বলেন, ভাইরাল ফ্লু ও করোনার উপসর্গ প্রায় একই। তবে কোভিডে আক্রান্ত হলে ফুসফুস দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে শ্বাসকষ্ট হয়। সাধারণ ফ্লুতে এমনটা হয় না। এছাড়া এক সপ্তাহের বেশি জ্বর-সর্দি থাকলে ও স্বাদ-গন্ধ না পেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরমার্শ দেন তিনি।

এদিকে, ভাইরাসজনিত এ জ্বর অনেকের ভেতরে দেখা দিয়েছে করোনা আতঙ্ক। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে জ্বর নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা। এছাড়া সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জ্বর-সর্দি থাকলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠানো যাবে না। এ বিষয়ে স্কুলের শিক্ষক ও অ’ভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

চিকিৎসকরা বলছেন, তাপমাত্রার উঠা-নামা, হঠাৎ গরম ও হঠাৎ ঠান্ডা লাগা এবং সর্বোপরি সিজনাল (ঋতু পরিবর্তনজনিত) কারণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই জ্বর হলে শীত শীত ভাব, মাথা ব্যথা, শরীরে ও গিরায় ব্যথা, খাওয়ায় অরুচি, ক্লান্তি, দুর্বলতা, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হওয়া, চুলকানি, কাশি, অস্থিরতা ও ঘুম কম হতে পারে।

আরও সংবাদ

Close