আজকের সিলেট

র‌্যাগিংয়ের দায়ে তিন শিক্ষার্থী বহিষ্কার নিয়ে পাল্টা অভিযোগ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) র‌্যাগিংয়ের দায়ে তিন শিক্ষার্থী বহিষ্কারের ঘটনায় পাল্টা অভিযোগ উঠেছে।

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিংয়ের অভিযোগকারী ওই নবীন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। তাদের দাবি ওই শিক্ষার্থীকে মেয়েদেরকে যৌন হয়রানী করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ করা হয়েছে।

সম্প্রতি র‌্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃত তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নবীন এক শিক্ষার্থীর যে অভিযোগ ছিল তা মূলত যৌন হয়রানির ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা বলে অভিযোগ করেছেন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ মোস্তাকিম শাকিব নামে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নবীন এক শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে এই বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল রানা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নাফি আনোয়ার সাদি ও নূর-ই-আলম সিদ্দিকিকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

র‌্যাগিং এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সামিউল ইসলাম।

কিন্তু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি, র‌্যাগিং এর অভিযোগকারী সৈয়দ মোস্তাকিম শাকিবের বিরুদ্ধে এর আগে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন তার এক সহপাঠী। এ ঘটনার মীমাংসার জন্য সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে মেসে ডেকে নিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে শাকিব তিন সিনিয়রের বিরুদ্ধে মিথ্যা র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ করেছেন।

তারা বলছেন, রাতারাতি এই মিথ্যা র‌্যাগিং অভিযোগে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে সহযোগিতা করেছেন শাকিবের মামা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জুবায়ের বিন মুখলিছ।

তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংবাদ মাধ্যমে একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছেন। এতে বিভাগের ৯৩ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর রয়েছে। তারা পুনরায় তদন্তের মাধ্যমে তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কার আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিবাদ লিপিতে তারা বলেন, মোস্তাকিম শাকিব ভর্তির পর থেকেই মেয়েদের অনবরত যৌন হয়রানি করে আসছিল। মেয়েরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে আমরা গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে বুঝানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে পাঠানটুলার একটি মেসে নিয়ে যাই। সেখানে বিভাগের অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী ছিলেন। সকলের উপস্থিতে তাকে আমরা মেয়েদের হয়রানি করা থেকে বিরত থাকতে বলি। কিন্তু সে উল্টো অভিযোগকারী মেয়েদের হুমকি দিতে লাগল।

তারা বলেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি মেয়েদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র উপদেষ্টাদের কাছে মোস্তাকিমের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেয় হয়রানির শিকার এক ছাত্রী। কিন্তু মোস্তাকিম যৌন হয়রানির ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ওই দিনই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শুধুমাত্র সিনিয়র তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিং এর অভিযোগ এনে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে শাস্তির আবেদন করেন। সে ঘটনায় ওই দিনই তাৎক্ষণিকভাবে তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, যেটা অযৌক্তিক।

আরও সংবাদ

Close