শীর্ষ খবর
করোনা সনদ নাই, টাকা দিয়ে পার পেলেন ১৪৭ লন্ডন প্রবাসী
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস ২য় দফা ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ-প্রতিবেশ। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট আসেন ১৯৩জন যাত্রী। ফ্লাইটটি ওসমানী বিমানবন্দরে নামার পর দেখা দেয় নাটকীয়তা। করোনার সনদ নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বিমানবন্দরে, শেষ অবধি সিলেটের প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে লন্ডন থেকে আসা যাত্রীদের নিজ নিজ বাসায় পাঠানো হয় কোয়ারেন্টিনে।
সূত্র জানায়, ফ্লাইট (বিজি-২০২) লন্ডন থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ কওে ১৯৩ জন যাত্রী নিয়ে। যাত্রীদের অধিকাংশেরই হাতে ছিল না করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট। সার্টিফিকেট না থাকা যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের এ সিদ্ধান্ত মানতে অপারগতা প্রকাশ করেন যাত্রীরা।
এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ অবস্থায় বিমানবন্দরে অচলাবস্থা চলতে থাকে প্রায় ২/৩ ঘন্টা। বিমান প্রতিমন্ত্রী ও বিমানের এমডি পর্যন্তও গড়ায় উদ্ভূত এ বিষয়টি। যাত্রীরা নিজ নিজ বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকবেন-এই শর্তে গন্তব্যে যেতে দেয়া হয় তাদেরকে ।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আহমদ সিরাজাম মুনির রাহিল বলেন, যাত্রীদের ডিক্লারেশন ফর্মে করোনা সার্টিফিকেট থাকা না থাকার বিষয়টি দেয়া হয় সিল মেরে। তবে, যাত্রীদের মধ্যে মাত্র ৪৭ জন যাত্রীর পাওয়া গেছে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট। এছাড়া করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছিল না বাকিদের। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম ও সিভিল সার্জন ডা: প্রেমানন্দ মন্ডলের সিদ্ধান্তে তাদেরকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। তবে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমন তথ্য জানান ডা: রাহিল।
এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, জানান, যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের।
এদিকে, বিমানটি ওসমানী বিমানবন্দরে নামার পর পরই শুরু হয় নাটকিয়তা। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েন যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীরা। অভিযোগ উঠেছে অনেক যাত্রী দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে বেরিয়ে এসেছেন। তবে এসব ব্যাপারে কোন ধরনের তথ্য দিতে পারেননি সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে ব্যবস্থাপক দায়িত্বরত কেউ।
সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একটি ফ্লাইট যাত্রীদের নিয়ে সিলেট ওসমানী বিমাবন্দর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট আসে। তবে কতজন যাত্রী আসেন আর যাত্রীদের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি এসব বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। পরামর্শ দেন বিমান বাংলাদেশের সিলেট স্টেশনের ব্যবস্থাপকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য।
এ ব্যাপারে বিমান বাংলাদেশের সিলেট স্টেশনের ব্যবস্থাপক এটিএম সামসুজ্জামান জানান, যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে আসা বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীদের বেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কি সিদ্ধান্ত হয়েছে আর কয়জন যাত্রী এসেছেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করেছেন সিলেটের সিভিল সার্জনের একটি টিম। বিস্তারিত জানতে তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পুলিশ ও র্যাবের কাছে যাত্রীদের দেয়া হয়েছে। এখনও তারা করণীয় নির্ধারণ করবেন।
সিলেট র্যাব-৯ এএসপি (গণমাধ্যম) একেএম কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে কোন লন্ডনের যাত্রীদের দেয়া হয়নি। আর এরকম কোন তথ্য নেই আমাদের কাছে।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানন্দর থানার ওসি শাহাদৎ হোসেন জানান, লন্ডন থেকে আসা কোন যাত্রীদের পুলিশের কাছে দেয়া হয়নি। আর এরকম কোন তথ্য নেই।