সামাজিক বনায়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর আমরা সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করি। এর মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা পেয়ে মানুষ এখন সচ্ছল জীবন-যাপন করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথম যখন আমরা সরকারে আসি, তখন সিলেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ইকোপার্ক নির্মাণ করি। এগুলো করার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য বন রক্ষায় বনায়ন বৃদ্ধি করা। একই সঙ্গে পরিবেশকে সুরক্ষিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, বর্তমানে সামাজিক বনায়নের সঙ্গে জড়িত ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬০১ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৪ জনের মাঝে ৩৫৬ কোটি ৮২ লাখ ৬৪ হাজার ৫২২ টাকার চেক দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০১৯ এবং জাতীয় বৃক্ষ রোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান। এবার ৫ জুন ঈদুল ফিতর ছিল। তাই আজ বাংলাদেশে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবারে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘বায়ু দূষণ’।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশ ও বনের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী।
বক্তব্য শেষে পরিবেশ ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বৃক্ষ মেলার বিভিন্ন অংশ তিনি ঘুরে দেখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক বনায়ন প্রকল্প বহু আগে থেকেই ছিল। ১৯৯৬ সালের আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা সামাজিক বনায়নের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে খেয়ে ফেলেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর বনের পাশে বসবাসকারী পরিবারদের আমরা বনের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করি। তাদের গাছের চারা দেই। গাছ লাগিয়ে তারা লালন-পালন করে। যারা গাছ লাগিয়ে লালন-পালন করে বড় করে, তাদের গাছ বিক্রি থেকে ১০-২০ ভাগ লভ্যাংশ দেয়া হতো। ফলে তারা বনের রক্ষণাবেক্ষণে মনোযোগী হতে পারেননি।
তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পরে সামাজিক বনায়নে অংশীদারদের ৭৫ ভাগ লভ্যাংশের টাকা দিয়েছি। ফলে তারা নিজেরা লাভবান হচ্ছে, নিজেরা সচ্ছল হচ্ছে এবং বন রক্ষায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অংশীদারদের ৭৫ ভাগ দেয়ার পরে বাকি ২৫ ভাগ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা থাকে, যা দিয়ে আবার গাছের চারা উৎপাদন হয় এবং তা আবার অংশীদারদের বিলি করা হয়। সম্প্রতি ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৪ জন অংশীদারের মধ্যে ৩৫৬ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার ৫২২ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।