শীর্ষ খবর
আবরার হত্যায় বিবৃতি : জাতিসংঘ প্রতিনিধিকে তলব
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হলের ভেতরেই পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ নেতারা। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিবৃতি দেয়ায় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোকে ডেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সরকার।
১৩ অক্টোবর, রবিবার সকালে মিয়া সেপ্পোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (জাতিসংঘ অনুবিভাগ) মহাপরিচালক নাহিদা সোবহানের দপ্তরে তলব করে এই অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে প্রথম আলো।
একই ইস্যুতে যুক্তরাজ্য হাইকমিশন তাদের ফেসবুক পেজে বিবৃতি দেয়ায় ১০ অক্টোবর ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসনকে ডেকে পাঠিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান মিয়া সেপ্পোকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের সমন্বয়কারীর ঢাকা দপ্তর থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেটি মোটেও ঠিক হয়নি। কারণ, সরকার এখানে মতপ্রকাশ বা মুক্তচিন্তাকে প্রতিহত করেনি। তা ছাড়া এ বিষয় নিয়ে সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। যে হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত ও বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা নিয়ে এ ধরনের বিবৃতি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, সরকার মনে করে, এটি (বিবৃতি) অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ। এ ধরনের বিবৃতি দিয়ে অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা যাবে না।
৯ অক্টোবর জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, অবাধ মতপ্রকাশের অভিযোগে বুয়েটের এক তরুণ শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ নিন্দা জানাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার না করায় বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে সহিংসতায় অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘের বাংলাদেশ দপ্তর লক্ষ করছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ফলে স্বাধীন তদন্তকারীরা একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্বচ্ছ বিচারের পথে যাবেন, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সহায়ক হবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চর্চার জন্য কাউকে হয়রানি, নির্যাতন ও হত্যা করা উচিত নয়।
৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।