আজকের সিলেটমৌলভীবাজার
কমলগঞ্জে দাফনের ৫ মাস পর তরুণীর লাশ উত্তোলন
কমলগঞ্জে দাফনের ৫ মাস পর এক তরুণীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। দুর্ঘটনা নয় বরং পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়েছে- পরিবারের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ।
নিহত লিজা আক্তার (২২) মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুরস্থ গুড নেইবারস বাংলাদেশ মৌলভীবাজার সিডিপির স্বেচ্ছাসেবী কর্মী ছিলেন।
আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরীন চৌধুরী, শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী, কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার নাহিমা আক্তার ও কমলগঞ্জ থানার এসআই ফরিদ মিয়ার উপস্থিতিতে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের পূর্ব আদকানী পারিবারিক কবরস্থান থেকে লিজা আক্তারের লাশ উত্তোলন করা হয়। কবর থেকে লাশটি তোলার পর ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২১ জুলাই বিকালে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর-কোনাগাঁও সড়কে দ্রুতগতির চলন্ত মোটরসাইকেলের পিছন থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে হাসপাতাল নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন। সে সময় ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি লিজার মা আলেমা বেগম বাদী হয়ে গত ২৪ আগস্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমল আদালত মৌলভীবাজার এ মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সেদিন বিকাল ৩ টায় অফিসের কাজে লিজা পূর্ব কোনাগাঁও যায়। রিকশা বা সিএনজি যোগে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও প্রজেক্ট ম্যানেজার জন বৃগেন মল্লিক (৪০) ও প্রোগ্রাম ইনচার্জ জীবন্ত হাগিদকে লিজা আপত্তি জানানোর পরও জোরপূর্বক ফখরুল ইসলাম শাকিল নামে ড্রাইভিং ও লাইসেন্সবিহীন একজন সহকর্মীর মোটরসাইকেলে যেতে বাধ্য করা হয়। যে বিভিন্ন সময়ে লিজার সাথে ঝগড়া বিবাদ ও অশোভন আচরণ করে থাকতো। লিজা বারবার বাঁধার দেয়ার পরও কোন ভ্রুক্ষেপ না করে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানো অবস্থায় পিছন দিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ফেলে দিলে লিজা মাটিতে ছিটকে পড়ে গুরুত্বর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায়।
লিজার মা আলেমা বেগম অভিযোগে আরো জানান, আমার মেয়ে লিজার মৃত্যুতে প্রায় পাগল থাকাকালীন সময় জন ব্রিগেন মল্লিক ও জীবন্ত হাগিদক আমার ছেলে ওবায়েদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে। পরিকল্পিত হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যু বলে ভুল বুঝিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া তড়িঘড়ি করে আমাকে দিয়ে কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে লাশ দাফন সম্পন্ন করে। এ কারণে দোষীদের শাস্তির দাবিতে আদালতে মামলা করেছি। আমার মেয়ের দাফন শেষে কয়েক দিন পর অফিসে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারি। তখন ঢাকায় সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর মাইনুদ্দিন মাইনুল হেড অফিসে খবর দিয়ে নেন এবং তিনি এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমাদের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে কোন প্রকারের অভিযোগ না করতে হুমকি দেন। তাই বাধ্য হয়ে গত ২৪ অক্টোবর আদালতে মামলা করি।