আজকের সিলেটসুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জে পানিবন্দি লাখো মানুষ : বিপদসীমার উপরে সুরমা, যাদুকাটা
সুনামগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জ জেলার ৩২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার ৪১০টি পরিবার।
রোববার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পনি বেড়ে বিপদ সীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা যাদুকাটার পানি বিপদ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার বেশিরভাগ এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে।
বন্যার পানি বাড়ায় উঁচু এলাকায় হাঁটু সমান, নিচু এলাকার ঘরবাড়ি কোমর থেকে গলা সমান পানিতে ডুবে গেছে। ফলে জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ছাড়া অন্য সকল উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় চারটি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় পাঁচটি, তাহেরপুর উপজেলার সাতটি, জামালগঞ্জ উপজেলারি দুটি, ছাতক উপজেলার পাঁচটি, দোয়ারাবাজার উপজেলার দুটি, শাল্লা উপজেলার একটি, ধর্মপাশার দু’টি এবং জগন্নাথপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ২১৩ মিলিমিটার। তবে এর চেয়েও বেশি বৃষ্টি হয়েছে উজানের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে। ভারী বর্ষণ ও উজানের পানিতে জেলাজুড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন সীমান্তবর্তী উপজেলা সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারা, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর এলাকার বাসিন্দারা। পাহাড়ি ঢলে গ্রামের পর গ্রাম ডুবে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ।
এদিকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় পাঁচ হাজার, বিশ্বম্ভরপুরে পাঁচ হাজার, তাহিরপুরে তিন হাজার, জামালগঞ্জে ৪০০, ছাতকে ১৯ হাজার ৩৯৬, দোয়ারাবাজারে ১১ হাজার, শাল্লায় ১৪, ধর্মপাশা উপজেলায় ২৫০ এবং জগন্নাথপুর উপজেলায় ৫০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪৮টি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে ৪৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন জানানো হলেও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানা গেছে। পানিবন্দি এসব মানুষ চরম জ্বালানি ও খাদ্য সংকটে পড়েছেন।