আজকের সিলেট
রায়হানের আর্তনাদে অন্য পুলিশও হতবাক : এমন নির্মমভাবে কাউকে মারে?
অটোরিকশা চালকের কাছ থেকে জানা গেল রায়হানের আর্তনাদে পুলিশ সদস্যরাও হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। রায়হানের উপর আঘাতের নির্মমতায় অনুতপ্ত ছিল খোদ বন্দর বাজার পুলিশ সদস্যরা। সেকারনে হাসপাতলে নেয়া কালে সিএনজি চালকের কানে উঠে দুই পুলিশ সদস্যের বিবেকী দংশনের কথোপকথন। তারাও বলেছে, ‘এমন নির্মমভাবে কেউ কাউকে মারে? স্যার আদেশ দিয়েছেন বলেই মারতে হলো।’
অটোরিকশা চালক বলেন, সেই রাতে এস.আই আকবর ফাঁড়িতেই ছিলেন এবং তার নির্দেশেই রায়হানকে মারধর করা হয়। আকবর নিজের হাতেও নির্মমভাবে রায়হানকে নির্যাতন করেছেন বলে ওই অটোরিকশা চালক জানান। এভাবে রায়হান হত্যাকান্ডের নির্মমতা তুলে ধরেছে সেই রাতের এক সিএনজি চালক। ওই চালক ও তাঁর আরেক সঙ্গীর দু’টি সিএনজি অটোরিকশাতেই সেই রাতে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দুটি পুলিশ টিম টহল দেয়।
এর মধ্যে একটি অটোরিকশাতেই রায়হানকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই অটোরিকশা চালক সিলেটভিত্তিক একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, শনিবার দিবাগত (১২ অক্টোবর) রাতে সিলেট নগরীর কাষ্টঘর এলাকার একটি সুইপার কক্ষ থেকে রায়হানকে বের করে নিয়ে আসে পুলিশ। এর আগে নগরীর মাশরাফিয়া রেস্টুরেন্টের সামনে অজ্ঞাত দুইজন লোক পুলিশকে এসে খবর দেয়, একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে কাষ্টঘরের গলিতে ।
সেই অটোরিকশা চালক জানান, পুলিশ গিয়ে একটি সুইপারের কক্ষ থেকে রায়হানকে ডেকে বের করে। তখন সেখানে কোনো ছিনতাই বা রায়হানকে গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটতে দেখেননি অটোরিকশা চালক। ওই গলি থেকে রায়হানকে বের করে দ্বিতীয় (ওই চালকের সঙ্গীর) অটোরিকশাযোগে ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। তখন রায়হান ছিলেন সুস্থ শরীরেই। এসময় রায়হান পুলিশের সাথে তর্কে লিপ্ত হয়ে বলেন- আমি কোনো ছিনতাইকারী বা অপরাধী নই। রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে নিয়ে যাওয়ার পর ফাঁড়ির বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন দুই অটোরিকশা চালক। পরে সকালে রায়হানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই দুই চালকের মধ্যে একজনের অটোরিকশাতে করে নিয়ে যায় ওসমানী হাসপাতালে পুলিশ। অটোরিকশা চালক জানান, হাসপাতালে নেয়ার পর রায়হানের অবস্থা আরও খারাপ হয়। তাকে দেয়া হয় অক্সিজেন। এর আগে ফাঁড়ি থেকে রায়হানকে বের করার সময় তার হাটুর নিচে ও হাতের আঙ্গুলে আঘাতের চিহ্ন দেখেন ওই তিনি।
সূত্র- ইনকিলাব