শীর্ষ খবর

বলতে ও শুনতে পারবে জন্মগত মূক-বধির শিশুরা

সিলেটবাসীর জন্য একটি বিরাট সুখবর নিয়ে এলো এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এখানে জন্মগত বধির ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য চালু হচ্ছে ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট’। যার ফলে জন্মগত বধিরও শুনবে কানে, সেই সাথে কথাও বলবে।

জন্মগত বধির বা শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় পরিবারকে। এজন্য তাদের শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনতে পরিবার থেকে শত চেষ্টা করা হয়। আর এই চিকিৎসার জন্য সিলেটের মানুষকে যেতে হয় ঢাকায়। কিন্তু এবার সিলেটবাসীর জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ লক্ষে গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম কিবরিয়া স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এ প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে এ প্রকল্প সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ মোট ৫টি প্রতিষ্ঠানে চলবে। অতীতে বিশেষ পদ্ধতির এ অপারেশন পদ্ধতি চালু ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ঢাকা ও জাতীয় নাক, কান, গলা ইন্সটিটিউট। কিন্তু এবার যে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছে এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিবর্তে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই অপারেশনের মাধ্যমে যে সব শিশু জন্ম থেকেই কানে শুনবে না, তাদেরকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দক্ষ ও ডেডিকেটেড সার্জারি টিম দ্বারা কানের পেছনে অপারেশনের মাধ্যমে ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট’ স্থাপন করা হবে। এতে অপারেশনের পরে কোন প্রকার জটিলতা তৈরি না হলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর মাধ্যমে তাকে প্রোগ্রামিং ও ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে তার শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনা হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় শিশুদের কানের পেছনে ইলেকট্রনিক ডিভাইস লাগিয়ে ব্যয় বহুল এ অপারেশন প্রক্রিয়াটির নাম ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট’ সার্জারি।

বিষয়টি নিয়ে বেশ আন্দোলিত ওসমানী মেডিকেল কলেজের নাক-কান-গলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা নাঈম। আলাপকালে তিনি জানান- ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট’ হচ্ছে একটি মডার্ন টেকনোলোজি। এই টেকনোলোজি সিলেটে আসায় জন্ম থেকে কানে না শোনা ও বলতে না পারা শিশুদের চিকিৎসায় একটা সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে।

ডা. নুরুল হুদা নাঈম বলেন- বাংলাদেশের ৯.৬ ভাগ মানুষ কানে কম শোনে। এছাড়া জাতিসংঘের হিসেব মতে প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রায় ২৬০০ শিশু বধীর হয়ে জন্মায়। এ অবস্থায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই মডার্ন টেকনোলোজির চিকিৎসা শুরু হওয়া সিলেটবাসীর জন্য সৌভাগ্যের। এ ব্যপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জয়নুল বারি ও সিওমেক এর অধ্যক্ষ ডা. ময়নুল হক’র প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এর আগে অতি ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা পূর্বে বিদেশে করানো হতো। খরচ ছিলো সীমাহীন। বাংলাদেশে বেসরকারিভাবে যদি একটি কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট স্থাপন করা হয় তাহলে খরচ পড়বে ন্যুনতম ১০-২০ লক্ষ টাকা।

আরও সংবাদ

Close