আজকের সিলেট

বড়লেখায় মসজিদ কমিটির সমস্যাকে কেন্দ্র করে ব্যাক্তিগত সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্ট : বড়লেখার দক্ষিণভাগে সফরপুর জামে মসজিদ কমিটির সমস্যাকে কেন্দ্র করে মসজিদের নাম ব্যবহার করে ব্যাক্তিগত সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা চলছে। মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারির হেলাল আহমেদ।

হেলাল আহমেদের অভিযোগ, আমার জমি হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রাচীর নির্মাণ করতে পারছি না। পুলিশ আমার সব কাগজপত্র দেখে আমাকে প্রাচীর নির্মাণের অনুমতি দিলেও আব্দুর রউফ এবং তার সহধর্মীনি  বাধা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা নানা ভাবে আমাকে হয়রানি ও হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। বিষয়টি আমি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেবকেও অবগত করেছি। তিনি বলেছেন, উনি দেখছেন কি করা যায়। তিনি যদি কোনো সমাধান দিতে না পারেন তাহলে আইনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। বৈধ মালিকানা সত্ত্বেও এভাবে হয়রানি করার অভিযোগে মানহানির মামলা করবেন বলে জানান তিনি।

জানা যায়, মসজিদের পাশের রাস্তার বিপরীতে ৪টি বৈধ দলিলসহ মোট ৩৫.১৭ শতক জমি ক্রয় করেন হেলাল আহমদ। যার প্রথম দলিল ১৯৯৫ সালে লিখিত হয়। ২য় দলিলটি ২০১৬ সালে, ৩য় টি ২০১৭ এবং ৪র্থ টি ২০২০ সালে লেখা হয়। হেলাল আহমেদ বলেন, সবকটি দলিল করার সময় তিনি সাবেক সভাপতি মৃত খুরশিদ আলীকে অবগত করেন এমনকি বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সাবেক সেক্রেটারি আব্দুর রউফও অবগত। তারা জানান যে তাদের কোনো সমস্যা নেই। মসজিদের দলিল যাচাই করে দেখা গেছে দলিলে উল্লেখ রয়েছে এবং মসজিদের বিবরণীতেও আছে যে মসজিদ এর দক্ষিণ এবং পশ্চিম পাশে রাস্তা। তাই আমি রাস্তার বিপরীতের জমি ক্রয় করি।

তিনি আরো বলেন, মসজিদের রাস্তার বিপরীতে আগে একটি টয়লেট ছিল। যেটা আমি ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দলিল করার সময় জমির মালিককে বলি টয়লেটটি সরিয়ে দিতে হবে। জমির সাবেক মালিক বলেন মসজিদ এর সবদিকে উনাদের জমি কোনো সমস্যা হবে না উনি জায়গা দিবেন। উল্লেখ্য, মসজিদ এর জমি দাতা এবং হেলাল আহমেদের কাছে জমি বিক্রেতা একই ব্যক্তি। তিনি বিক্রেতা ও মসজিদের দাতা পরিবারের সদস্য নিজে সরজমিন থেকে সীমানা ভাগ করে দেন। তারপর হেলাল আহমেদ মসজিদের সাবেক সভাপতি মৃত খুরশিদ আলীকে বিষয়টি অবগত করেন তিনিও বলেন যে মসজিদের টয়লেট জায়গা পাওয়া গেলে এবং টয়লেট নির্মাণ করে দিলে কোনো সমস্যা নেই।

এ বিষয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সাবেক সেক্রেটারি আব্দুর রউফও অবগত ছিলেন। কিন্তু তিনি এখন তা অস্বীকার করছেন বলে অভিযোগ হেলাল আহমেদের। তার প্রশ্ন এখন যেহেতু অস্বীকার করছেন তাহলে আজ থেকে ৫ বছর আগে যখন আমি টয়লেট নির্মাণ করেছিলাম তখন তিনি কোথায় ছিলেন?

হেলাল আহমেদ বলেন, আমি গত মাস থেকে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ শুরু করি। তখন আব্দুর রউফ সাহেব সীমানা প্রাচীর নির্মাণে  বাধা দেন এবং পুলিশকে অবগত করেন। পরে বড়লেখা পুলিশের এসআই নজরুল ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে এবং দলিলপত্র নিয়ে থানায় দেখা করতে বলেন। তখন ২ দিন আমি কাজ বন্ধ রাখি এবং সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে থানায় গিয়ে তার সাথে দেখা করি। মসজিদ কমিটির সদস্যরাও মসজিদের সকল কাগপজপত্র নিয়ে আসেন। এসআই নজরুল আমার এবং মসিজদ কমিটির সব কাগজপত্র দেখে বলেন, আমার কাগজপত্র ঠিক আছে আমি কাজ চালিয়ে যেতে পারবো। মসজিদ কমিটির সদস্যরাও এতে সম্মতি দেন। কিন্তু কাজ শুরু করলে ফের আব্দুর রউফ ও তার স্ত্রী আমাকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। প্রাচীর নির্মাণ কাজ বন্ধ করার হুমকি দিচ্ছেন।

তার অভিযোগ, মসজিদ কমিটি নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু মনোমালিন্য রয়েছে। মূলত কমিটির অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এটা আমার ব্যক্তিগত কোন সমস্যা না। অথচ এর জের ধরে আব্দুর রউফ আমাকে হয়রানি করছেন।

আরও সংবাদ

Close