মৌলভীবাজারশীর্ষ খবর
লাউয়াছড়া উদ্যানে বসছে মোবাইল টাওয়ার : হুমকিতে জীববৈচিত্র
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জতীয় উদ্যানে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই সংরক্ষিত বনের দুই কিলোমিটারের ভেতর ডলুছড়া এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসাচ্ছে টেলিকম কোম্পানি টেলিটক। মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানোর ফলে লাউয়াছড়া বন ও বণ্যপ্রাণী হুমকিতে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা যায়, লাউয়াছড়া বনের দুই কিলোমিটারের মধ্যে ডলুছড়া নামক টিলার অবস্থান। পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই লাউয়াছড়ার ভেতরে মোবাইল টাওয়ারের কাজ করছে টেলিটক কোম্পানি। তাই টাওয়ার স্থাপনের জন্য টিলার মাটি কেটে বড় বড় গর্ত তৈরি করেছেন শ্রমিকরা। টাওয়ার তৈরির জন্য আনা হয়েছে বড় বড় রড। তবে সেখানে শ্রমিক ছাড়া টেলিটকের কর্তৃপক্ষ কাউকে পাওয়া যায়নি। পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়া এই টাওয়ার বসানো হলে লাউয়াছড়ার জীববৈচিত্র্যে হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা পরিবেশবাদিসহ প্রাণী বিশেষজ্ঞদের। এছাড়াও বনে টাওয়ার বসালে নেটওয়ার্ক শক্তিশালী থাকার কারণে গাছচোর চক্র নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সহজেই বনে অপকর্ম করতে পারে।
এ ব্যাপারে লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব আবুল হাসান বলেন, এমনিতেই লাউয়াছড়া বন নানান কারণে হুমকির সম্মুখীন। তার ওপর যদি এভাবে মোবাইলের টাওয়ার স্থাপন করা হয় তাহলে রেডিয়শনের প্রভাবে পাখিদের ডিম নষ্ট হবে। প্রাণীদের জীবনযাত্রার প্রভাব পড়বে। তাই এই এলাকায় টাওয়ার স্থাপন থেকে টেলিটককে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।
টাওয়ার স্থাপন কাজের ঠিকাদার অশোক জানান, এখানে টেলিটক কোম্পানির টাওয়ারের কাজ চলছে। পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন আছে কি না তা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি তিনি। বনবিভাগকে না জানালেও বনবিভাগ এখন পর্যন্ত কোনো আপত্তি জানায়নি। সম্প্রতি বিট কর্মকর্তা এসে টাওয়ার স্থাপনের জায়গা দেখেও গেছেন বলে ঠিকাদার জানান।
সিলেট পরিবেশ অধিফতরের উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, এই রকম কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে সংরক্ষিত বনের ক্ষেত্রে এ বিষয় অবশ্যই বনবিভাগ দেখবে।
সহকারী বন-সংরক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, সংরক্ষিত বনা লের দুই কিলোমিটারের ভেতরে এমন মোবাইল টাওয়ার বসানোর কোনো অনুমতি নেই। টওয়ারের রেডিয়েশনের প্রভাবে পাখির ডিম ও জীব-বৈচিত্র্যের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়াও বনে টাওয়ার বসালে নেটওয়ার্ক শক্তিশালী থাকে। এতে গাছচোর চক্র নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সহজেই বনে অপকর্ম করতে পারে। তা এখানে কোনো ভাবেই টাওয়ার বসাতে অনুমতি দেওয়া যাবেনা বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ)শামসুল মোহিত চৌধুরী জানান, বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও বলেন এখানে কোন অনুমোদন তারা নেয়নি।