প্রবাস

প্রজন্ম ’৭১- এর গোলটেবিল আলোচনা : স্বাধীনতাবিরোধীরা যেন রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে না পারে

লন্ডন প্রতিনিধি : বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তানদের অনেকেই বর্তমানে খোলস পাল্টে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে চলেছে। বাংলাদেশকে স্বাধীনতার চেতনায় এগিয়ে নিতে হলে এসব সুবিধাভোগী স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে খুঁজে বের করে প্রতিহত করা সময়ের দাবি। গত ৮ জুলাই সোমবার প্রজন্ম ’৭১ যুক্তরোজ্যের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক গোল টেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। কোনো রাজাকার পরিবারের সন্তান যাতে স্বাধীন বাংলার রাজনীতিতে অংশ নিতে না পারে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোতে শুদ্ধিঅভিযান পরিচালনার দাবি জানান তাঁরা।
পূর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওই গোলটেবিল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাজাকারের তালিকা তৈরির যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটিকে সাধুবাদ জানানো হয়। রাজাকার এবং রাজাকারের বংশধর যারা প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে তারা যেন এই তালিকা প্রণয়নে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেজন্য সরকারের কঠোর নজরদারির আহবান জানানো হয়। বক্তারা বলেন, দেরিতে হলেও সরকার কর্তৃক রাজাকারদের তালিকা তৈরির এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক শহীদ সন্তান মোহাম্মদ বাবুল হোসেন। সভা পরিচালনা করেন কবি এ কে এম আবদুল্লাহ।
সভায় বক্তারা অনতিবিলম্বে ৩০ লক্ষ্য শহীদের তালিকা তৈরির আহবান জানান। গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। গণহত্যার সাথে জড়িত পাক বাহিনীর সদস্যদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান। যারা পাকিস্তানী বাহিনীকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে তাদের সকলকে রাজাকার হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানান। শহীদ পরিবার কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে শহীদ পরবিারগুলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেখভালের ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্থাপনাসমুহ, স্থান ইত্যাদি সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে পর্যাপ্ত বাজেট প্রণয়ন, মুক্তযোদ্ধা পরিবারের ত্যাগ, তাদের জীবনের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা এবং সকল শহীদদের কবর সরকারিভাবে সংরক্ষণ করার দাবি জানান। নতুন প্রজম্নের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পাঠ্যপুস্তকে পর্যাপ্ত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা এবং ‘জয়বাংলা’ স্লোগানটি সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করার জোর দাবি জানান বক্তারা।
এছাড়া বাংলাদেশের সবখানে রাস্তাঘাট ও সরকারী এবং স্বায়স্তশাসীত স্থাপনাগুলো মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নামে নামকরণের দাবি জানানো হয়। রণাঙ্গনের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রনণয়ন এবং ভুয়া সনদ নিয়ে যারা সরকারী সুবিধা ভোগ করে আসছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে স্বাধীনতার সেই চেতনাকে সংবিধান এবং রাষ্ট্রের সর্বোত্র সুমুন্নত করার দাবি জানান বক্তারা।
গোলটেবিল আলোচনা সভায় অংশ নেন সাবেক সংসদ সদস্য সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ দেওয়ান গৌস সুলতান, যুক্তরাজ্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল কাশেম খান, সাংবাদিক ও গবেষক মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক কাজল, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহবাব চৌধুরী, আমির খান, আবদুল হাদি, ফয়জুর রহমান খান, আশরাফ উদ্দিন মুকুল, সৈয়দ গোলাম আলী, দেওয়ান কামাল, আতিকুর রহমান, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ জালাল উদ্দিন, সহ সভাপতি হরমুজ আলী, যুগ্ম সম্পাদক নইমুদ্দিন রিয়াজ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহাদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক শাহ শামীম আহমদ, আইন সম্পাদক এম এ করিম, ধর্ম সম্পাদক সুরুক মিয়া, যুক্তরাজ্য ন্যাপের সভাপতি আবদুল আজিজ, বাসদের আহবায়ক গয়াসুর রহমান গয়াস, জাসদ জেএসডি-এর সভাপতি আলহাজ সমির উদ্দিন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য আনসার আহমদ উল্লাহ, সর্ব ইউরোপিয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য ডঃ রোয়াব উদ্দিন, ডাঃ আবদুল কাদির, হেলাল উদ্দিন আহমদ, লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সৈয়দ এহসান, সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান মুজাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক নেতা তৌহিদুল ইসলাম বাহার, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সায়েদ আহমদ সাদ, সহ সভাপতি আহবাব হোসেন, যুক্তরাজ্য বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদের মাহমুদুর রহমান, সিরামিশী গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবারের পক্ষে মনতাজ আলী ও আঙ্গুর আলী, যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল খান, প্রজন্ম একাত্তরের মেহেদি হাসান, মজুমদার আলী মিয়া, সৈয়দ গোলাপ আলী, হুমায়ুন কবির, আবুল হোসেন ওদুদ, আমিনুল হক জিল্লু, সাইদুর রহমান, যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সরওয়ার কবির, কবি নজরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তাস সাংবাদিক সুমেল প্রমুখ।
বক্তারা আশা করেন, স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনায় একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলে শহীদদের স্বপ্নের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও সংবাদ

Close