আন্তর্জাতিকশীর্ষ খবর
আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিচার শুরু
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিচার শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টার দিকে এই মামলার শুনানি শুরু হয়ে চলে ৬টা ১০ মিনিট পর্যন্ত।
তিন ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ধরে চলা এই শুনানিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের কাছে মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘটিত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস গণহত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের চিত্র তুলে ধরেন মামলার বাদী গাম্বিয়ার আইনজীবীরা। এ সময় প্রোজেক্টরে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের চালানো নৃশংসতার সচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
আদালতে মামলা দায়েরকারী দেশ গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবু বকর তাম্বাদু রোহিঙ্গাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
সূচনা বক্তব্যে আবু বকর তাম্বাদু বলেন, ‘সভ্য মানুষ হিসেবে আমরা গণহত্যার দায় এড়াতে পারি না। …গাম্বিয়া চায় মিয়ানমার নিজেদের নাগরিককে হত্যা বন্ধ করুক।
আদালতে ১৭ জন বিচারপতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সোমালিয়ার বিচারপতি আব্দুল কোয়াই আহমেদ ইউসুফ।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি।
আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবী তাফাদজ পাসিপান্দো বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের কথা অস্বীকার করতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি কৌশল অবলম্বন করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ফেক রেপ’ নামে একটি পেজ খোলা হয়; এ পেজের নিয়ন্ত্রণ করছে স্টেট কাউন্সিলরের দফতর।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নারীদের গণধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সু চি বলেছেন, সেনাবাহিনী এবং বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর কেউ নোংরা বাঙালি মেয়েদের স্পর্শ করবে না। কারণ তারা আকর্ষণীয় নয়। তার আগে মামলার শুনানির শুরুতে গাম্বিয়ার আইন ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামাবাদু বলেন, বর্বর এবং নৃশংস এসব কাজ; যা আমাদের সবার বিবেককে আঘাত করেছে। এটি এখনও অব্যাহত রয়েছে। মিয়ানমারকে নিজ দেশের মানুষ হত্যা বন্ধ করতে হবে।
মামলার চূড়ান্ত রায় আসতে আট সপ্তাহ থেকে কয়েক বছর সময়ও লেগে যেতে পারে। তবে গাম্বিয়া প্রাথমিক শুনানিতে বিচারক প্যানেলের কাছে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ‘অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ’ জারির আবেদন করবে।